বাগেরহাট প্রতিনিধি: উচ্চ বেতনে সরকারি ও ব্যাংক প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করতেন তারা। পরিচয় দিতেন কখনো ব্যাংক কর্মকর্তা, কখনো কাস্টমস কর্মকর্তা আবার কখনো প্রভাবশালী নেতার নিজস্ব লোক হিসেবে। ঢাকার গুলশানে অভিজাত এলাকায় অফিস, দামী গাড়ি, সরকারি দলের বিভিন্ন নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে সেগুলো ফেসবুকে আপলোড দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করতেন চাকরি প্রার্থীদের। বাগেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানায় এমন দুই প্রতারকের নামে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযুক্তরা হলেন- একই উপজেলার ৫নং বাহিরদিয়া মানসা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সাতবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা, শেখ মাহমুদুল হাসান (৩০) ও শেখ টিপু (৩২)।
ফকিরহাট মডেল থানায় মামলার অভিযোগকারী কামরুজ্জামান সুজন জানান, প্রতারক মাহমুদুল হাসান নিজেকে কাস্টমস কর্মকর্তা ও শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ জন পরিচয় দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এবং কর্মসংস্থান ব্যাংকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এর মধ্যে কামরুজ্জামান সুজনের কাছ থেকে মাহমুদুল হাসান ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ব্যাংকের মাধ্যমে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নগদ ৫৫ হাজার টাকা নেন। অপরদিকে শেখ টিপু ২ লাখ ৫০ হাজার নগদ নিয়েছে। শেখ পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের সাথে প্রতারকদ্বয় ছবি তুলে সে নিজেকে শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচয় দিয়ে মূলত তার বিশ্বাস অর্জন করেন। চাকরি প্রদানে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত চাইলে তারা নানা টাল বাহানা ও প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে বলে উল্লেখ করে ভিকটিম অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, শেখ মাহমুদুল হাসান নিজেকে কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও সে মূলত প্রতারক। সম্প্রতি কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে এক তরুণীকে বিয়ে করতে গেলে, মেয়ের পরিবারের জেরার মুখে পালাতে বাধ্য হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তদের ব্যাপারে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন ব্যক্তি জানান, মাহমুদ ও হারুন ( শেখ টিপু) রাতারাতি শূন্য থেকে কোটিপতি বনে গিয়েছে। তিনি এখন ২৫ লাখ টাকা দামি গাড়িতে চড়েন, গড়েছেন বিল্ডিং, অভিজাত পাঁচতারা হোটেলে এদের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। বেকার এই দুই যুবকের আয়ের উৎস কেউ জানে না।
তিনি আরও জানান, মাহমুদের পিতা ছোট বেলায় মারা গিয়েছে অনেক দুর্দশা কষ্টের মাধ্যমে বড় হয়েছে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সে এলাকার অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। অপর অভিযুক্ত হারুন ওরফে শেখ টিপুর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, হারুন ( শেখ টিপু ) এর বাবা গত ১ বছর আগে মারা গিয়েছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হারুনের বাবা ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন, বর্তমানে তাদের একাধিক ব্যবসা রয়েছে।
এ বিষয়ে ফকিরহাট মডেল থানার এস আই মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগটির বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available