আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আহমেদ ভুঁইয়া ও তার সহযোগীদের নেতৃত্ব চলছে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্য। তাদের টাকা দিলেই ইমিগ্রেশনের যে কোনো ধরনের নিয়ম পাল্টে যায় এক মুহূর্তে। যাত্রীদের বহিগর্মন ফরম পূরণ করে টাকা নেওয়া থেকে শুরু করে নিয়মবহির্ভূত সকল কাজই টাকার মাধ্যমে করে থাকেন তারা।
আরও জানা যায়, বহির্গমন ও আগমনী ডেস্কে বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় প্রায় সময়। এমনকি পাসপোর্ট ঢিল দিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বাজিতপুরের বাসিন্দা মহিউদ্দিন সম্রাটের পাসপোর্টের মেয়াদ চলতি বছরের এপ্রিলে মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে ভ্রমণ করার সময় ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করতে গেলে ইমিগ্রেশন ডেস্কে দায়িত্বরত কর্মকর্তা পাসপোর্টের মেয়াদ ৩ মাসের কম থাকায় ওই যাত্রীকে ইমিগ্রেশন ইনচার্জের কাছে পাঠান, তখন ইনচার্জের নির্দেশে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ইমিগ্রেশনের কাজটি সম্পূর্ণ করে দেয় তার সহযোগী কনস্টেবল।
ওই যাত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এক কনস্টেবলের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভুঁইয়াকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বহির্গমন ডেস্কের কাজ শেষ করে ভারতে যাচ্ছেন।
এছাড়াও, ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা আদায় করা হয় এখানে। কোনো নারী একা ভারতে গেলে তার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা।
কুমিল্লার বাসিন্দা শিহাব উদ্দিন গত পাঁচ মাসে এ পথে তিনবার ভারতে গেছেন। তিনি বলেন, এ ইমিগ্রেশনে অঘোষিত নিয়ম এখানে আসলে ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা দিতেই হবে। তা না হলে দেখবেন কত সমস্যার কথা বলবে। তাই ঝামেলায় না গিয়ে টাকা দিয়েই যাতায়াত করি। না দিয়ে কী করব, কার কাছে বলবো?
চট্টগ্রামের এক যাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার বাবা অসুস্থ গত মাসে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন। তিনি তার বাবার জন্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ ও ঔষধ কিনতে যাচ্ছেন। তার ভিসা হলো রোগীর এটেনডেন্ট ভিসা। তিনি তার বাবার চিকিৎসার সমস্ত কাগজপত্র সাথে নিয়েছেন। তাকে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে আটকে দিলে তিনি তিন হাজার টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আহমেদ ভুঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে বলেন, এসব অভিযোগ সত্য না। এখানে আমি বা আমার কোনো লোকের পক্ষ থেকে যাত্রীদের হয়রানি এবং যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো টাকা আদায় করা হয় না। এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একটি পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করে ওই যাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ দেড় মাস রয়েছে। তাহলে ওই যাত্রী কী করে ভারতে গেলেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) জয়নাল আবেদীন বলেন, এসব বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available