বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালের উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে ঘের নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে গভীর রাতের তাণ্ডব চালিয়ে প্রতিপক্ষ। এ সময় ছয়টি পানির সেচ পাম্প, মুরগির খামারে পানির সংযোগ বিছিন্ন, কয়েক হাজার মিটার প্লাস্টিকের পাইপ ও ঘরবাড়ি ভাংচুরসহ কোটি টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা আসাদ হাওলাদার ও তার ভাই বিএনপি নেতা ইলিয়াস ও কিবরিয়ার নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল ১৬ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে রুবেল বালি, ইদ্রিস হাওলাদার ও মাহফুজ বালীর মাছ ও মুরগির প্রজেক্টে তান্ডব চালিয়ে ছয়টি সেচ পাম্প ও একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, পাইপ, টিউবওয়েলসহ প্রায় কোটি টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ সময় ভাড়াটি সন্ত্রাসীরা মাইক্রবাস যোগে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে বাসটিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
ঘের মালিক রুবেল বালি জানান, পশ্চিম সাতলা মৌজা থেকে পাকা রাস্তা পর্যন্ত স্থানীয় জনগণ ও খামার মালিকদের মুরগি ও মাছের খাদ্য আনার জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয় এক মাস আগে। এতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বাধা প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত গভীর রাতে আসাদ, ইলিয়াস, কিবরিয়া, রাসেল, জুয়েল, সোহেল, মশিউর বালী, রায়হান, শামীমসহ ৪০-৫০ জনের সশস্ত্র একদল সন্ত্রাসী ট্রলারযোগে প্রজেক্টে ঢুকে খামারের গুদাম লুট করে মাছ ও মুরগির খাবার নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, শেচ পাম্পের পাইপ কুপিয়ে খন্ড বিখন্ড করে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে।
এ বিষয়ে সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খাইরুল বাসার লিটন মিয়া জানা,ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র ঘেরটি দখলে রাখার উদ্দেশ্যে জনস্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত রাস্তাটি না হওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। একই সাথে তার ইন্ধনে সন্ত্রাসী আসাদ বাহিনী দিয়ে রাতে এই তাণ্ডব ঘটিয়েছেন। এই বাহিনীর অত্যাচার থেকে হিন্দুরাও রক্ষা পায়নি।
উপজেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মো. ফয়জুল হক বালী ফারাহীন বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাওলাদার অবৈধভাবে ঘেরটি দখল করার উদ্দেশ্যে জনস্বার্থে নিজ জমিতে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত রাস্তাটি বন্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। সে কারণেই রাতে তাণ্ডব চালিয়ে সেচ পাম্প ও পাইপে অগ্নিসংযোগ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি আনোয়ার হোসেন বালী জানান, শাহিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী আসাদ ও তার ভাই বিএনপি নেতা ইলিয়াসসহ একটি সন্ত্রাসী দল এলাকায় মূর্তিমান আতংক। এই হামলার কঠিন বিচার হওয়া উচিত।
রাতের তাণ্ডবের বিষয় অভিযুক্ত মো. আসাদ হালদারকে বারবার ফোন দিলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীনের হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নি সংযোগ ও তাণ্ডবের বিষয়ে আমি জড়িত না। মূল বিষয় হলো ঘেরটি জোর দখল করে বিগত বছরগুলোতে কৃষকদের ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পরে কৃষকদের নিয়ে ঘেরটি আমরা গত বছর মাছ চাষ শুরু করলে কৃষকরা লাভবান হয়। এতে সভাপতি মহোদয়ের গ্রুপ ঈর্ষান্বিত হয়ে ঘেরের মাঝ থেকে পরিকল্পিতভাবে রাস্তার নাম করে ঘের দখলের চেষ্টা চালাচ্ছ।
গভীর রাতের তাণ্ডবের বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ জাফর আহম্মেদ বলেন, আমি ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছি, আলামত হিসেবে একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available