চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছেলেসহ দুই জনকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ইমাম হাসান রিপন (৩৫) নামে এক যুবক বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশীয় এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
১৬ মার্চ শনিবার রাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচলাইশ তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলামের বড় ছেলে মো. সহিদুল ইসলাম কামাল এবং আব্দুল কাদের সুজন নামে দুইজনকে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন তিনি। এর আগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তিনি নিজেই পুলিশ ডেকে আনেন।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ইমাম হাসান রিপনদের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে কাউন্সিলর শফিকের ভাই হাসানুলের পুরোনো দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। কিছুদিন আগে রাস্তায় সবার সামনে অকথ্য ভাষায় কাউন্সিলরকে গালাগাল করেন রিপন। শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিপনের বাসায় গিয়ে তার মা-বাবার কাছে নালিশ জানান কামাল। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন আব্দুল কাদের সুজন। পরে রিপন তাদের দুইজনকে ঘরের ভেতর কৌশলে আটক করে রাখে।
ওসি বলেন, একপর্যায়ে রাত ১২টার পর বাসা থেকে বের হয়ে রিপন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, তাকে মারতে তার বাসার সামনে দুই ব্যক্তি অস্ত্রসহ এসেছেন এবং লোকজন তাদের ধরে ফেলেছে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে হাজির হলে একটি অস্ত্র হাতে পুলিশের সামনে আসেন রিপন এবং অস্ত্রটি দিয়ে কামাল ও সুজন তাকে আঘাত করেছেন দাবি করেন তিনি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী এবং রিপনের কথার অমিল পেলে সন্দেহ হয় পুলিশের।
পরে অস্ত্রটি জব্দ করে তাকে থানায় আনা হয়। এরপর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ নিশ্চিত হয় রিপনের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি কামাল ও সুজনের নয়।
ওসি সিনহা আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রিপন অস্ত্রের বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রিপনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রিপনের মা হাজেরা খাতুন জানায়, রাতে কামাল ও সুজন তার বাসার সামনে গেলে তাদের সাথে কথা বলতে যায় ছেলে রিপন। একপর্যায়ে বাসায় নিয়ে আসা হয় তাদের দুজনকে। এরমধ্যে রিপনকে বেশ কয়েকবার ফোনে বিভিন্ন স্থানে কথা বলতে দেখেন তিনি। ওই সময় অনেক মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায় ওই বাড়িতে। এরমধ্যে তিনি কামাল ও সুজনকে নাস্তা দিয়েছিলেন। তবে কোনো অস্ত্র চোখে দেখেননি তিনি। রাত ১২ টার পর কামাল ও সুজন চলে যাওয়ার সময় হঠাৎ সেখানে পুলিশ আসে এবং তার ছেলে রিপনকেসহ আটক করে নিয়ে যায়।
তিনি দাবি করেন, তার ছেলে অস্ত্রের বিষয়ে কিছুই জানেন না। ছেলেকে যেন কোনোভাবে ফাঁসানো না হয় সেজন্য সঠিক তদন্ত দাবি করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) উত্তরের এডিসি পঙ্কজ দত্ত বলেন, পুলিশ প্রশাসন বরাবরই পেশাদরিত্বের সাথে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। অন্যায়ভাবে কেউ যেন কোনো মামলায় ফেঁসে না যায় সেজন্য সতর্কতার সাথে প্রতিটি ঘটনা পর্যালোচনা করা হয়। রিপন পুলিশকে ব্যবহার করে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে কামাল ও সুজনকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। তবে তার এ ধরণের অপরাধমূলক পরিকল্পনা সফল হতে দেয়নি পুলিশ। অস্ত্রটি কীভাবে রিপনের হাতে এসেছে সেটিও তদন্ত করে বের করবে পুলিশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available