আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্দরের উন্নয়ন কাজে বসতবাড়ি অধিগ্রহণের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সীমান্তের ২০/২৫টি পরিবার। বসতবাড়ি বাঁচিয়ে প্রয়োজনে নাল জমি অধিগ্রহণ করার আহবান ওই পরিবারগুলোর। বাপ দাদার শত বছরের স্মৃতি বিজরিত বসতভিটি রক্ষা করার দাবি পরিবারগুলোর।
বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দরে একটি আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হবে। এজন্য বন্দর এলাকায় ৩ একর ৬১ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। আন্তর্জাতিক টার্মিনাল নির্মাণ হলে একই ছাদের নীচে কাস্টমস, বিজিবি, ইমিগ্রেশনসহ সরকারের অন্যান্য অফিস থাকবে। এত যাত্রী পারাপারে সুবিধা বাড়বে।
টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব জানিয়ে দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের ১০/১২ জন ভূমির মালিককে নোটিশ দিয়েছে। সর্বশেষ গত ১৯ জানুয়ারি জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। অধিগ্রহণের আওতাভূক্ত জায়গাগুলি বসতভিটা এবং নাল ভূমি। এ নোটিশ পাওয়ার পর থেকেই ভূমির মালিকরা শত বছরের বাপ দাদার স্মৃতিবিজরত বসতবাড়ি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। তাদের দাবি বসতভিটা রক্ষা করে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবে। এতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
কালিকা পুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের বাড়িঘরের জায়গাটি অধিগ্রহণ করার জন্য মাপজোক করেছে। এরপর থেকে এখানে ২০/২৫টি পরিবার আতঙ্কের মধ্যে আছি। সরকারের কাছে আবেদন আমাদের বসতভিটি রক্ষা করে নাল জমি অধিগ্রহণ করা হোক। তাহলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারব।
সরকার অধিগ্রহণ করে যে টাকা দিবে তা দিয়ে দিয়ে অন্য জায়গায় জমি কিনে বাড়িঘর নির্মাণ করতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হবে। সরকারের আমাদের আকুল আবেদন আমাদের বাড়িঘর রক্ষা করে অধিগ্রহণ করা হউক।
অধিগ্রহণের নোটিশপ্রাপ্ত মো: আওলাদ হোসেন বলেন, এখানে বন্দরের উন্নয়ন কাজের জন্য আমাদের বাড়িঘরসহ কিছু জমি মাপজোক করেছে। সরকারের কাছে আবেদন এখানে অনেক নাল জমি আছে। অধিগ্রহণ করার দরকার করে বসত বাড়ির জায়গা অধিগ্রহণ না করে নাল জমি অধিগ্রহণ করা হোক। এতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। আমাদের আর্থিক অবস্থাও এত ভালো না।
আরেক বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, আমরা ২০/২৫টি পরিবার আছি। আমরা খুবই দরিদ্র লোক। সবাই চাষবাস করে আমরা চলি। এখন আমাদের বাড়িঘর গুলো অধিগ্রহণ করে নিলে অন্য জায়গায় গিয়ে নতুন করে বাসস্থান তৈরি করে বসবাস করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন প্রয়োজনে আমাদের জমিগুলো নিক। আমাদের বাড়িঘরগুলো অধিগ্রহণ না করা হোক।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক (ট্রাফিক) মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আখাউড়া স্থলবন্দরে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা পর্যায়ে আবেদন করেছে। সে কারণে আখাউড়া স্থলবন্দরে সাড়ে ৩ একর জায়গা অধিগ্রহণের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এলও শাখা থেকে ৪ দফা নোটিশ জারি করেছে। নোটিশের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ধাপগুলো অগ্রসর হবে। আন্তর্জাতিক টার্মিনাল নির্মাণ হলে যাত্রীরা পারাপারে সুযোগ সুবিধা পাবে। একই ছাদের কাস্টমস, বিজিবি, ইমিগ্রেশনসহ সরকারের অন্যান্য অফিস হবে। ফলে যাত্রীদের সেবা পেতে দুর্ভোগ পড়তে হবে না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available