লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাট জেলার চাষাবাদের কৃষি জমিতে যেদিকে তাকাই তামাক আর তামাক এমন দৃশ্যই লালমনিরহাটের গ্রামগুলোতে দেখা যাচ্ছে এখন। জেলায় শীত মৌসুমে কৃষি জমি গুলোতে প্রায় আশি ভাগ বিষবৃক্ষ তামাক চাষ হচ্ছে।
এক দিকে যেমন তামাক চাষের কারণে জমি উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে, তেমনি জমি চাষাবাদেও হচ্ছে অনুপযোগী। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে জমির জৈবিক শক্তিও। অন্যদিকে তামাক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ করার কারণে কৃষক পরিবারের লোকজন থাকছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। ফুসফুসের রোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে অনেক বেশি। জ্বর সর্দি কাশি আর শরীর ব্যথা হচ্ছে তাদের নিয়মিত সমস্যা।
জেলায় প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষের রেকর্ড দেখালেও বাস্তবে তামাক চাষ হয়েছে এর দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে। তামাক চাষে উৎসাহিত করার জন্য ঋণ সুবিধা দেয়া হয় এই গরিব কৃষকদের। এর ফলে বেড়েই চলেছে এই বিষবৃক্ষ তামাক চাষ। সামান্য লাভের প্রত্যাশায় তামাক চাষে মনোনিবেশ করেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে এই অঞ্চলের গরিব কৃষকরা। আর এই জন্য ভুলে যাচ্ছেন মাটির ক্ষতির কথা, ভুলে যাচ্ছেন নিজেদের স্বাস্থ্যের কথাও।
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার (৪৭) বলেন, তামাক চাষে তাদের শ্রমিক মজুরি দিতে হয় না বরং সার কীটনাশকের খরচ বহন করে টোব্যাকো কোম্পানীগুলো, এতে আমাদের লাভ হয় বেশি। তাছাড়া এই বিষবৃক্ষ তামাক চাষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রচুর সময় ও শ্রম দিতে হয়।
এছাড়া, জেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের এ বিষয়ে বেশি করে শাকসবজি, আলু, ধান ভূট্টাসহ অন্যান্য ফসলী জমিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করার প্রচারণা একেবারে নেই বললেই চলে। আর যেগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তা খুব একটা কাজে আসছে না বলছে সচেতন মহল, দরকার জরুরি ও শক্ত পদক্ষেপ।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন জানান, তামাক চাষ তো নিষিদ্ধ না এতে আইনগতভাবে পদক্ষেপও নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমাদের জায়গা থেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available