মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ভুয়া নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় আদালতের আদেশে বরখাস্ত হলেও সরকারি বাসা ছাড়েননি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মো. জাহাঙ্গীর মিয়া।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর একদিনের ছুটি নিয়ে মামলার শুনানির জন্য আদালতে যান তিনি। আদালত তার বিরুদ্ধে ৪৬৮ ধারায় রায় দেন। এতে তাকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড ও এক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমামের দেওয়া আদেশে বলা হয়, আসামির ভুয়া নিয়োগপত্র জমা দিয়ে চাকরি করার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য যে সব বেতন ভাতা তিনি পেয়েছেন তা বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হলো।
চাকরি বিধি অনুযায়ী, কেউ বরখাস্ত হলে তাকে সরকারি বাসা ছাড়তে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র বলছে, মো. জাহাঙ্গীর মিয়াকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চ দুটি চিঠি পাঠিয়ে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে বরখাস্তের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি পরিবার নিয়ে এখনো সরকারি বাসভবনেই থাকছেন।
সরেজমিনে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমপ্লেক্সের সরকারি বাসভবনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।
বাসাটিতে ঢুকে পাওয়া যায় মো. জাহাঙ্গীর মিয়াকে। তিন দিন আগে জামিনে এসেছেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তার স্ত্রী। বলতে থাকেন, শত্রুরা সাংবাদিক পাঠিয়েছে। জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, আমি জামিনে এসেছি তিন দিন হয়। এখনও কিছু জানি না। যদি নির্দেশ পাই বাসা ছেড়ে যাব। তবে চিঠি পাওয়ার বিষয় অস্বীকার করেন তিনি।
হরিরামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার বিরুদ্ধে সাজা হওয়ায় তার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
হরিরামপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেহরুবা পান্না বলেন, চাকরি বিধি অনুযায়ী তিনি ওই বাসায় থাকতে পারবেন না। এজন্য তাকে দুই মাসে দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও (ইউএনও) অবহিত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available