কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, তার স্ত্রী, পূত্র এবং পূত্রবধূর বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া পৌরসভার জন্য আদায় করা অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে ভুয়া বিল ভাউচার ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীলকমল পালকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা নীলকমল পাল।
আনোয়ার আলী কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নীলকমল পাল স্বাক্ষর করা পত্র মোতাবেক অভিযুক্তরা হলো, কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, তার স্ত্রী আকতার জাহান, ছেলে পারভেজ আনোয়ার ও পূত্রবধূ নোশিন শারমিন। সবাই কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা।
দুদকের পত্রে বলা হয়েছে, পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পৌরসভার আদায় করা অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব সম্পদেও তথ্য সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য তাদের স্থাবর সম্পদ অর্জনের রেকর্ড পত্রাদি পর্যালোচনার প্রয়োজন।
অনুসন্ধানের স্বার্থে আগামী ৬ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য গত ১ এপ্রিল সোমবার জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা রেজিস্ট্রারসহ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক বরাবর চিঠি দিয়েছে দুদক।
অতএব, তাদের কোনো প্রকার প্লট, ফ্ল্যাট, দোকান বা কোনো স্থাপনা বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকলে সে সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রাদির মূলকপি সংরক্ষণ পূর্বক ১ সেট সত্যায়িত ছায়ালিপি এ পত্র প্রাপ্তির তারিখ হতে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য দুদক সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা নীলকমল পালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩ এপ্রিল বুধবার কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দফতরে এই চিঠি পৌঁছেছে।
এ ব্যাপারে দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা নীলকমল পাল বলেন, আমরা কোনো অভিযোগ পেলে সেটির প্রাথমিক তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং অভিযোগের বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য হাইকমান্ডের অনুমতি চেয়ে আবেদন করি। তাদের অনুমতি সাপেক্ষে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে সংখ্যক নিয়োগ দেয়ার কথা তারও বেশি নিয়োগ দিয়েছে অর্থের বিনিময়ে। আর এসব অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না, আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অনুসন্ধান কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের অনুসন্ধ্যান আগেই করার কথা ছিলো। জাতীয় নির্বাচনের কারণে থেমে ছিলো, এখন শুরু হলো।
জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা রেজিস্ট্রারসহ দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছু নথিসহ তথ্য চাওয়া হয়েছে। সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোনো অনিয়ম এবং অসংগতি পাওয়া গেলে তখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার গত জাতীয় নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন। সেসময় হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available