জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা: মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইম্যুর মাধ্যমে জহুরুল ইসলাম নামে (৩১) এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একইভাবে তার স্বামী আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) নারী সেজে মোবাইল ফোনে আরেক যুবক আপেল মাহমুদের (৩০) সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর সেই সম্পর্কের জের ধরে তাদের প্রত্যেকের সাথে প্রতারণা করে আসছিল এই দম্পতি ও তাদের সহযোগীরা। অবশেষে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দম্পতিসহ প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- ঢাকার ধামরাই উপজেলার মুরারচর গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) ও তার স্ত্রী মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫), গাইবান্ধা শহরের ডেভিট কোম্পানীপাড়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ফাহিম মিয়া (২২), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তরফমন গ্রামের ময়নুল শেখের ছেলে রুবেল শেখ (২৫) ও বামনকুড়ি (কইপাড়া) গ্রামের জহুরুল আকন্দের ছেলে জুয়েল আকন্দ (২৬)।
৫ মার্চ সোমবার দুপুরে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে আপেল মাহমুদের সঙ্গে ১৫ দিন আগে রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দের মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আপেলকে গত ৩ মার্চ সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথা মোড়ের নূর জাহান আবাসিক হোটেলে ২০৯ নং রুমে আটক করে রাখে। সেখানে প্রতারণামূলকভাবে তার নগ্ন ছবি ও অম্লীল ভিডিও তৈরি করার হুমকি প্রদর্শন করে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত চাঁদার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য আপেলকে দিয়ে তার পরিবারের লোকজনদের ওপরর চাপ প্রয়োগ করে। এই টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আপেলকে মারপিট করে নগদ ১৮ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এসময় আপেল মাহমুদ তার পরিবারের লোকজনদের জানালে তার পরিবার গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আপেল মাহমুদকে নুরজাহান আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার এবং প্রতারক রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
অপরদিকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ কুঠি গ্রামের এনছার আলীর ছেলে জহুরুল ইসলামের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইম্যুর মাধ্যমে প্রায় ১০ দিন আগে মেহনাজ আক্তার সাথী নামে এক নারীর পরিচয় হয়। এরপর মেনহাজ আক্তার সাথী জহুরুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে গত ৩ মার্চ তাকে গোবিন্দগঞ্জ এলাকার ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। সেখানে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা সাথীর স্বামী আরিফ ও তার সহযোগী ফাহিম জহুরুলকে জিম্মি করে ঘরের ভেতর আটকে রেখে নগ্ন ভিডিও ধারণ ও মারপিট করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ দেড় হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় প্রতারক চক্রটি। এসময় মোবাইল ফোনে জহুরুল তার পরিবারকে জানালে স্বজনরা গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জঙ্গলমারা এলাকার ডায়াবেটিস হাসপাতালের পেছনে প্রতারকদের ভাড়া বাসা থেকে জহুরুল ইসলামকে উদ্ধার করাসহ প্রতারকদের গ্রেফতার করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শেষে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available