ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ৮ বছর ধরে কাজ চলছে, দ্বায়সারাভাবে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। উচ্চ আদালতের একটি আদেশ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে গত আট বছর ধরে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে চেম্বারের দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)। তাই নেতৃত্বহীন চেম্বারের কাজকর্ম চলছে দ্বায়সারাভাবে আর সদস্যদের মাঝে তৈরি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা। দীর্ঘ ১ যুগ পর ঠাকুরগাঁওয়ে জমজমাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচন।
দীর্ঘদিন পর ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইতোমধ্যে ২টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখিত প্যানেল ২টির প্রার্থীগণ ইতোমধ্যে লিফলেট বিতরণ, পোস্টার, নির্বাচনী বিলোবোর্ড টাঙ্গানো, সভা, সেমিনার ও মিটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সবকিছু মিলিয়ে এক প্রকার জমজমাট অবস্থা বিরাজ করছে।
ঠাকুরগাঁও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির বিভিন্ন আগ্রহী প্রার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২টি প্যানেল এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এর মধ্যে আলমগীর-মুরাদ-সুদাম প্যানেলে ১৪ জনের ছবি সম্মিলিত তালিকা ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে দুলাল-বাবলু-আরমান প্যানেলে ২২ জনের ছবি সম্মিলিত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
আলমগীর-মুরাদ-সুদাম প্যানেলের প্রার্থীগণ হলেন, চিটাগাং গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আহসান হাবীব আলমগীর, মাহিন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. মুরাদ হোসেন, সরকার মটরস’র নির্বাহী সুদাম সরকার, মো. শাহ্ জামান লাবলু, মো. শাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী বুলু, মো. ফরহাদ হোসেন, মো. সাহারিয়া মাহাবুব সাওন চৌধুরী, মো. খায়রুল ইসলাম রোমান, ইন্দ্রজিত গুহ ঠাকুরতা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আলহাজ্ব মো. আলমগীর হোসেন, মো. শওকত আলী সোহেল, কাজী মো. আজমগীর হক, মো. মারুফ হোসেন।
আন্যদিকে দুলাল-বাবলু-আরমান প্যানেলে সার ব্যবসায়ী এসএম সামছুজ্জামান দুলাল, সুপ্রিয় গ্রুপের পতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. বাবলুর রহমান (বাবলু), সেলিম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আরমান হোসেন (সোহেল), এন এইচ শাহ মো. এ্যাপোলো, শেখ জাহাঙ্গীর আলম (খোকন), মাসহুরা বেগম (হুরা), মো. এনামুল হক সরকার, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. মোস্তফা কামাল, মো. কাজী জামাল, মো. মনোয়ার হোসেন কামাল, মোতাহার হোসেন (মনির), চন্দনা ঘোষ, মো. সিরাজুস সালেকীন (শাওন), গণি মো. সুলতান হাসান (ইমরোজ), মো. ফরহাদুর রেজা (ডলার), মো. গোলাম সারোয়ার (রবিন), মো. রফিকুল ইসলাম (রোহান), এস এম এ সিনহা, মো. ফখরুল আলম (লিফাত), আমিন মো. আরিফ সমীর, মো. মাহবুব আলম ও এ কে আজাদ।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ এক যুগ ধরে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচন হতে চলেছে। এতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ১৯২ জন। সহযোগী ভোটার সংখ্যা ১৪৪ জন। নতুন কোনো জটিলতা দেখা দিয়েছে। আগামী ১৬ এপ্রিল ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ এপ্রিল শনিবার দুপুর ২টায় আলমগীর-মুরাদ-সুদাম প্যানেলের ঠাকুরগাও চেম্বার অফ কর্মাস (এক অংশ) ঠাকুরগাও প্রেস ক্লাবের দ্বিতল ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সকল সংবাদকর্মীগণের উপস্থিতিতে জানানো হয় নানা অভিযোগ। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী তফসিল পরবর্তী আসন্ন নির্বাচন অংশগ্রহণ নিমিত্বে নির্বাচনের প্রচার চালাইবারকালে নির্বাচনের ভোটার তালিকা মোতাবেক ভোটারগণকে খুঁজিতে গেলে দেখিতে পাই যে, কোন কোন ভোটার সেলুনের কারিগর, পরিছন্নতা কর্মী, দিলমজুর, কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্র্ রংমিস্ত্রি, হিমাগাল ও জুট মিলের শ্রমিক ও কর্মচারী রহিয়াছে। উক্ত ভোটারদের কিছু তালিকা তারা প্রদান করেন ভোটার তালিকা আরও দেখা যাইতেছে যে, মোট ভোটার কিন্তু ভোটার তালিকা করা হয়। এমনতম অবস্থায় স্পষ্ট দেখা যাইতেছে যে ভোটারগুলো বে-আইনিভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হইয়াছে।’
তারা বলেন, ‘আমাদের ভোটার সংখ্যা ৫৩৩৮ জন। উক্ত ভোটার সংখ্যার মধ্যে টিন সার্টিফিকেট ছাড়াই ভোটার হইয়াছে। সময়ের অভাবের কারণে তালিকা সংযুক্তি করতে পারেন নাই, তারা আইন মোতাবেক ভোট দেওয়ার কোনো অধিকার রাখে না। তারা এও জানান, অথচ প্রকাশ থাকে যে ভোটার তালিকার মধ্যে অনেক ভোটারের নাম প্রায় একি ভোটারের নামে আরো রহিয়াছে সঠিক ভোটার খুঁজিয়া পাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। নির্বাচনী প্রচারকালে আরো দেখা যাইতেছে যে ভোটার তালিকা মোতাবেক যে সমস্ত ব্যক্তিগণকে ভোটার হিসাবে চিহ্নিত করা হইয়াছে তাহাদের উক্ত ভোটারদের নিজেস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নাই। তারা আরো জানান, ভোটার তালিকায় ছবি যুক্ত হইলে উক্ত রূপ সমস্যাগুলো সমাধান করা সহজ হইত। প্রকাশ করা না হওয়ার কারণে ভোট গ্রহণ করার কালেকে নামের সহিত সঠিকভাবে চিহ্নিত করা এবং শনাক্ত না করার কারণে শৃংখলার অবনতির সমুহ সম্ভাবনা ঘটিতে পারে। প্রকাশিত ভোটার তালিকা মোতাবেক প্রচারকালে মারাত্মকভাবে ও হয়রানির সম্মুখীন হইতেছে সত্বেও নির্বাচনী প্রচারণার কাজ চালাইয়া যাইতেছি রেজাল্ট পরবর্তী তালিকার মাধ্যমে নির্বাচন করা একেবারেই কষ্টসাধ্য হইয়া পড়িয়াছে।’
তারা আরো বলেন, ‘ধর্মীয় রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান চলমান থাকায় ৫৩৩৮ জন ভোটারদের দিনে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করা সম্ভব না। নির্বাচনী তারিখ ১৬ এপ্রিল নির্ধারণ সাপেক্ষে একটি স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে আবেগ মর্যাদা যাচাই পূর্বক স্বচ্ছ ও এখানে সম্মিলিত ভোটার তালিকা আইডি কার্ড তৈরির একান্ত আবশ্যক হইয়াছে। অন্যথায় নির্বাচন প্রশাসক মহোদয় ও ঠাকুরগাঁও কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র সদস্য গণের ভাবমূর্তির মারাত্মকভাবে ক্ষতির আমরা আশঙ্কা করছি, যে এ অবস্থায় নির্বাচন হলে নির্বাচনী পরবর্তী জটিলতা সৃষ্টি হইতে পারে যা কোনভাবেই কাম্য নহে।’
তারা আরো বলেন, ‘এই অবস্থার বর্ণনার আলোকে স্বার্থে অস্পষ্ট নাম ও ঠিকানা বাতিল পূর্বক একটি স্বচ্ছ ছবি যুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করে পুরাতন ভোটার তালিকা বাতিল ও ছবি সম্মিলিত তালিকা প্রকাশ করা জরুরি। সেই সাথে তারা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available