রংপুর ব্যুরো: বাংলাদেশ বেতার রংপুর আঞ্চলিক প্রেরণ কেন্দ্রের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ গোপনে কেটে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রকৌশলী আবু ছালেহ’র বিরুদ্ধে।
১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সরে জমিনে গেলে অফিস সহায়ক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রকৌশলী আবু সালেহর নির্দেশে রেডিও টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বাহির থেকে গাছ কাটার লোকজন নিয়ে এসে বাউন্ডারির ভিতরের পুলিশ ব্যারাক সংলগ্ন লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মেহগনি, নিম গাছসহ কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেন।
বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক আঞ্চলিক প্রকৌশলীকে জানালে তিনি বিষয়টি জানেন বলে আমাকে জানান। পরে গাছগুলো সরাতে আমিও আবুল কালাম আজাদকে সহায়তা করি। কারণ, আমি ছোট চাকরি করি স্যারের নির্দেশ আমি অমান্য করতে পারি না। এ কারণেই স্যারের নির্দেশেই সহায়তা করেছি।
এ বিষয়ে রেডিও টেকনিশিয়ান আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এগুলো ছোটমোটো বিষয়, এগুলো নিয়ে নিউজ না করাই ভালো। আর-ই স্যার গাছগুলো কাটতে বলেছিল। কারণ, গাছগুলো বাতাসে ভেঙে পড়লে পুলিশ ব্যারাকে সমস্যা হতে পারে। এজন্যই গাছগুলো কাটার নির্দেশ দিয়েছিল আঞ্চলিক প্রকৌশলী। তবে তিনি বারবার অনুরোধ করেন এ বিষয়ে নিউজ না করার জন্য।’
অফিসের একটি সূত্র জানায়, শুধু গাছ কাটা নয়, প্রকৌশলী আবু সালেহ দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একই স্টেশনে থাকায় অফিসের বৈদ্যুতিক অচল জেনারেটর সচল দেখিয়ে তেল আত্মসাৎ ও চাষযোগ্য ৪০ একর আবাদি জমি ফেলে রাখাসহ নানান ধরনের অনিময় দুর্নীতির সাথে জড়িত।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বেতার রংপুর আঞ্চলিক কেন্দ্রের আঞ্চলিক প্রকৌশলী আবু সালেহ জানান, রংপুর বেতারের আঞ্চলিক কেন্দ্রের ভিতরে কিছু গাছ অনেক পুরাতন হয়ে পোকা ধরেছিল। যেকোনো সময় বাতাসে গাছগুলো ভেঙে পুলিশ ব্যারাকের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারতো। কারণ, পুলিশের ওখানে অনেক অস্ত্র গোলাবারত থাকে, সেগুলো দেখবার দায়িত্ব আমার। যাতে পুলিশের ঘরের কোনো ক্ষতি না হয়।
এ কারণে আমি মৌখিকভাবে গাছগুলো কাটার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই। ডিজি মৌখিকভাবে বলায় আমি গাছগুলো কাটার অনুমতি দিয়েছি। তবে কোনো গাছ আমি আত্মসাৎ করিনি।
তিনি আরো জানান, যেগুলো অনিয়ম দুর্নীতির কথা আমাকে জানিয়েছেন এ ধরনের দুর্নীতি আমি করিনি। তারপরেও আমি বন বিভাগের লোকজনকে ডেকে গাছগুলো তাদের মাধ্যমে সরকারি নিয়মে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি। তবে এই ছোট বিষয় নিয়ে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে বন বিভাগের রংপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, যেকোনো সরকারি গাছ কাটতে গেলে তা সরকারি নিয়ম মেনে কাটতে হয়। কিন্তু রংপুর বেতারের আঞ্চলিক প্রেরন কেন্দ্রের ভিতরের গাছগুলো কাটার সময় বন বিভাগকে জানানো হয়নি। প্রকৌশলী আবু সালেহ গাছ কাটার এক সপ্তাহ পরে আমাকে জানালে আমি গিয়ে কয়েকটি গাছের টুকরো দেখতে পাই। গাছগুলোর পরবর্তীতে দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে বলে তিনি জানান। তবে গাছগুলো এভাবে কাটা ঠিক হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান জানান, রংপুর বেতারের আঞ্চলিক প্রেরণ কেন্দ্রের যে গাছগুলো কাটা হয়েছে তা যদি সরকারি নিয়ম মেনে কাটা হয়ে থাকে তাহলে ভালো কথা। আর যদি সরকারি নিয়ম না মেনে কাটা হয়, তাহলে যে কেটেছে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available