কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাইয়ে ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্টের ৩২ লাখ টাকা ও একটি ব্যাংকের ১৩টি স্বাক্ষরিত চেকের পাতা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে এজেন্টের ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে। তার সন্ধান না পেয়ে এজেন্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার কালাই পৌরশহরের পাঁচশিরা বাজারে অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় গিয়ে এ তথ্য জানা যায়। বর্তমানে শাখাটি চালু থাকলেও টাকা ও চেকের পাতা উদ্ধার নিয়ে হতাশায় ভুগছেন এজেন্ট।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও এজেন্টের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৯ সালে কালাই পৌরশহরের পাঁচশিরা বাজারে অবস্থিত ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা পরিচালনার দায়িত্ব পান আঁওড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদের মন্ডল নামে এক ব্যবসায়ী। পরে তিনি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা পরিচালনার জন্য বগুড়ার শাহজানপুর উপজেলার মোদলা মালীপাড়ার আব্দুল হান্নান মন্ডলের ছেলে সাহিদ জামান শুভকে ক্যাশিয়ার পদে নিয়োগ দেন। তখন থেকে সে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার এ দায়িত্ব পালন করে আসছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এজেন্ট আব্দুল কাদের শাখার হিসাব ক্লোজিংয়ের জন্য ক্যাশিয়ার শুভকে ৩২ লাখ টাকা এবং স্থানীয় সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কালাই শাখায় আর্টি.জি.এস করার জন্য ১৩টি চেকের পাতা প্রদান করেন। ক্যাশিয়ার শুভ টাকা এবং চেকের পাতা জমা না করে সেগুলো গোপন রাখেন।
১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে টাকা ও চেকের পাতা জমা না হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন এজেন্ট আব্দুল কাদের। সাথে সাথে শাখায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন সকাল থেকেই ক্যাশিয়ার শুভ ব্যাংকে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরপর পাঁচশিরা বাজারে তার ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখতে পান বাড়ির মূল ফটকে তালা-চাবি ঝুলছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ক্যাশিয়ার শুভকে না পেয়ে বাধ্য হয়ে থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
কালাই পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ধাপ-কাথাইল মহল্লার বাসিন্দা আবু কালাম মীর বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং পাঁচশিরা শাখার ক্যাশিয়ার সাহিদ জামান শুভ প্রথম দিকে ভালই ছিল। আস্তে আস্তে সে স্থানীয় কিছু বখাটে ছেলের সাথে মিশে গেছে। মূলত তাদের ইন্ধনেই ক্যাশিয়ার শুভ এতগুলো টাকা ও স্বাক্ষরিত চেক নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। প্রতারক শুভর সাথে তার ইন্ধনদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।
কালাই পৌরশহরের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক রেজাউল করিম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এখানে টাকা-পয়সা লেন-দেন করে আসছি। কখনও বুঝতে পারিনি যে, ক্যাশিয়ার শুভ এমন কাজ করতে পারে। এজেন্টের এতগুলো টাকা ও চেকের পাতা নিয়ে পালিয়ে গেল কীভাব! আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ক্যাশিয়ার শুভ ছিল আমার খুব বিশ্বস্ত লোক। তাকে দিয়েই লাখ লাখ টাকা লেনদেন করিয়েছি। হঠাৎ করে তার এমন পরিবর্তন হবে তা কখনও ভাবিনি। কার ইন্ধনে সে আমার এতো বড় সর্বনাশ করলো তা এখনও বুঝতে পারছি না। আমি বাইরের কাউকেই দোষ দিব না। শুভ ৩২ লাখ টাকা ও স্বাক্ষর করা চেকের পাতা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। আমি ভাবতেও পারিনি শুভ এভাবে পালিয়ে যাবে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে না পাওয়ায় ভুক্তভোগীকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available