লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জে প্রায় শত বছর ধরে একটি ফসলের মাঠে পড়ে আছে বিশাল আকৃতির লোহার গোলকপৃন্ড সাদৃশ্য দুইটি বয়া। বয়া দুইটিকে ঘিরে এলাকাজুড়ে আছে অনেক ইতিহাস, জনমনের বিশ্বাস আর জনশ্রুতি। এ বয়াকে ঘিরেই ইতোপূর্বে কিছু মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিলো বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তি। ঠাঁই পেয়েছিলো অনেক কুসংস্কারও।
যদিও এটি এখন সুদূর অতীত। এখানো মাঝে মাঝে দর্শনার্থীদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ আসেন নানা মানত নিয়ে। ভূমি জরিপের সময় এ দুইটি বয়ার নামেই এ চরের নামকরণ করা হয় বয়ার চর। চরটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতি গ্রামে অবস্থিত।
এক সময় এ বয়াকে ঘিরে লক্ষ্মীপুরের তেওয়ারীগঞ্জের একটি ফসলী মাঠে চলতো মানা-মানতসহ ঢোল-বাজনা, হতো জিকির আসগার। কেউবা জালাতেন মোমবাতি। তাদের বিশ্বাস ছিলো এখানে মানত করলে পূরণ হবে মনের বাসনা। গভীর রাতে এ স্থান থেকে শোনা যেতো জিকিরের আওয়াজ। কেউবা মানত করে খেতেন মাটি। এসব দেখতেই তখন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতেন। এরপর বয়া দুইটির উপরের অংশের লোহার টাওয়ার, টুল, চেইনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি চুরি হয়ে যায়। এ বয়াকে ঘিরেই চলতো ধর্মীয় এসব কুসংস্কার। তবে এখনো মাঠে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রয়েছে বয়া দুইটি।
স্থানীয়রা জানান, মেঘনার বুকে জেগে উঠা বিস্তীর্ণ চরে ফসলি জমিতে রহস্যময় দুইটি বয়া দেখতে প্রতিদিনই উৎসুক মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। তাদের ভাষ্যমতে, ১৯৪৮ সালে এক ঘূর্ণিঝড়ের রাতে প্রবল বাতাস এবং বন্যায় মেঘনার ডুবোচরে আটকে যায় এ দুইটি বয়া। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে লম্বা চেইনের মাথায় গ্যারাপির সাথে আটকানো ছিল এ দুইটি বয়া। আবার কেউবা বলছেন, বয়া দুইটির বয়স শত বছর পার হয়েছে।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মাস্টারমেরিনার জাহাজের ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী সোহেল জানান, নদীতে জাহাজ চলাচলে বালুচর, পানির সমতা ও দিকনির্দেশনার কাজে বয়া ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময় বয়া তার স্থান থেকে সরে যায়। এ বয়াগুলো অনেক ওজন হওয়ায় ও অর্থ বরাদ্দের স্বল্পতায় অনেক সময় সেগুলো আর অপসারণ করা হয় না বলে জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available