নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায় কর্তৃক সাংবাদিকদের কটুক্তি ও মামলার হুমকির প্রতিবাদে এবং তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সৈয়দপুর উপজেলা সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ ওয়ালীউর রহমান রতন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, প্রবীণ সাংবাদিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি জিকরুল হক, অকুতোভয় সংবাদকর্মী সকালের সময় প্রতিনিধি মোতালেব হোসেন হক, প্রভাতের আলো প্রতিনিধি মাসুদুর রহমান লেলিন, সমকালের জেলা প্রতিনিধি আমিরুল হক আরমান, নাগরিক টিভির জেলা প্রতিনিধি সাদিকুল ইসলাম, তৃতীয় মাত্রা প্রতিনিধি অনলাইন এক্টিভিস্ট তামিম রহমান, নয়া দিগন্ত প্রতিনিধি জাকির হোসেন, ভোরের পাতার জয়নাল আবেদীন হিরো, যুগের আলোর রাজু আহমেদ প্রমুখ।
ডেইলি অবজারভার প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদ সাবেরের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, সংবাদ কর্মীরা সমাজের বিবেক। তারা স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে সকল অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে জাতিকে সচেতন করে। যে কারণে অন্যায়কারী ও দুর্নীতিকারীরা সতর্ক থাকে এবং সরকার দেশকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে দিক নির্দেশনা পায়। ফলে সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পায়, দেশ ও জাতি উন্নতি করে এবং সমৃদ্ধ হয়।
এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য অধিকার আইন করে অবাধ তথ্য প্রবাহের পথ অবারিত করেছে। অথচ সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার রায় এই তথ্য প্রদানের পরিবর্তে সংবাদ কর্মীদের সাথে অসদাচরণ করে সরকার প্রধানের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন। যা প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী করতে পারে না। এটা করে তিনি অন্যায় করেছেন। তাই এটা মেনে নেয়া যায় না।
এরপর সাংবাদিকরা সত্য তথ্য উপাত্ত নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় তিনি সেখানে কটুক্তি মূলক মন্তব্য করে সংবাদ কর্মীকে হলুদ সাংবাদিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতেই ক্ষ্যান্ত হননি, বরং উল্টো তিনিই ডিজিটাল সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করার হুমকি প্রদান করেছেন। যা সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনে অবৈধ দাপটের সামিল।
বক্তারা বলেন, সংবাদ যদি সঠিক না হয় তাহলে নিয়মানুযায়ী তিনি সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যমে লিখিত প্রতিবাদ দেয়াসহ সংবাদ সম্মেলন বা প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরতে পারেন। অথবা প্রেস কাউন্সিলে আবেদন করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা না করে ব্যক্তিগত আক্রোশ দেখিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন। তিনি যদি সৎ ও নীতিবান হোন তাহলে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত হলেই তা প্রমাণিত হবে। তখন তিনি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
আইনসিদ্ধ ও নিয়মতান্ত্রিক পথে না গিয়ে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পেশীশক্তির আশ্রয় নিয়েছেন। তার এমন আচরণের মূল কারণ তিনি অন্যায়কে ধামাচাপা দিতে গলাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপচেষ্টা চালিয়েছেন। নিজে করার পাশাপাশি বিভিন্ন জনকে দিয়ে হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি সাংসদের ইকু হেরিটেজ হোটেলের ম্যানেজারকে দিয়েও মোবাইলে ভয় দেখিয়েছেন।
আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই বিচার দাবি করছি। সেই সাথে সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ্যে ও ফেসবুক স্টাটাস দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিবেন। নয়তো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে সৈয়দপুর থেকে তাকে অপসারণ করতে হবে। আর যদি তা না করা হয় তাহলে এই কর্মকর্তার অপকর্মের পেছনের খুঁটি কি তা অনুসন্ধান করে আরও নিউজ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আন্দোলন জোরদার করা হবে।
মানববন্ধনে সৈয়দপুর প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, রিপোর্টার্স ক্লাব, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, বিএমএসএফ, সাংবাদিক জোটসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও অর্ধ শতাধিক সংবাদ কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available