চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যু মামলার অন্যতম আসামি এসএম আসাদুজ্জামান (৫২) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোজাফফর নগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মেট্রো ইউনিট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।
গ্রেফতার আসাদুজ্জামান এই মামলার ৫নং আসামি। তিনি চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা। মামলা হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। এই মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বেশকয়েকটি থানায় ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় ২৫টি মামলা ও জিডি রয়েছে।
এর আগে ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাকলিয়া থানার রাহাত্তালপুল এলাকা থেকে শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি জসীম উদ্দীন ও ১২ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার এলাকা থেকে আসামি মো. লিটনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরমধ্যে আসামি জসিমসহ বেশকয়েকজন রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করলে থানায় মামলা রেকর্ড করার আদেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন- তৎকালীন চান্দগাঁও থানার ওসি মো. খাইরুল ইসলাম, এএসআই মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীন, রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক (ডিডি) পদ থেকে অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ২৯ আগস্ট ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক ব্যক্তি। আদালত মামলার শুনানি শেষে ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আসামিরা আদালতে হাজির হওয়ার কোনো সমন পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদি হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু ওইদিনই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে দেন। এরপর ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে বাসা থেকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেফতার করে নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যু হয়।
তবে দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুয়া কাজের মেয়ে সাজিয়ে করা মামলাটি পরে মিথ্যা মামলা বলে প্রত্যাহার করে নেন মামলার বাদি তানিয়া।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available