রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: লক্ষীপুরের রামগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা দুনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রতিবাদে দলিল লেখকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। গত ২৪ এপ্রিল বুধবার শুরু হওয়া এ কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, দলিল রেজিস্ট্রির সময় নানা অজুহাতে দলিলপ্রতি অতিরিক্ত অর্থ আদায়, সেরাস্তার নামে সরকারি বিধি বহির্ভূতভাবে সাফ কবলা দলিল, হেবা দলিল, বন্টক নামা দলিল, অছিয়ত নামা দলিল, মটগেজ দলিল, দানপত্র দলিল, ভ্রম সংশোধন দলিলসহ সকল দলিল থেকে করনিকের মাধ্যমে প্রতি লাখে ৬শত টাকা হারে আদায় করছেন। সরকার বন্টক নাম দলিল, অছিয়ত নামা দলিল, মটগেজ দলিল, ভ্রম সংশোধন দলিলে সামান্য পরিমান ফি নির্ধারণ করলেও এসকল দলিল সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে কন্ট্রাক করে করতে হয়।
এসব দলিলে সাব-রেজিস্ট্রার নিজের খেয়াল খুশি মত মোটা অংকের টাকা আদায় করেন। তিনি রামগঞ্জ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে যোগদানের পর থেকে দলিল লেখকরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কোনো অসুস্থ ব্যক্তির দলিল রেজিস্ট্রি করতে ঢাকায় যেতে হলে কমিশন হিসেবে তিনি প্রতি দলিলে ৫০ হাজার টাকা, উপজেলার মধ্যে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। একই খতিয়ানে একই দিনে একাধিক দলিল হলে প্রতি দলিল বাবত ৪/৫ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে।
ভোক্তভুগী শৈলখালী গ্রামের মো. বেলায়েত হোসেন ও সোন্দড়ার শামসুল আলম বলেন, আঙ্গাপাড়া মৌজার সম্পত্তি ক্রয়ের পর দলিল করতে গেলে সাব-রেজিস্ট্রার তা আটকে দেন। চুক্তিভিত্তিক টাকা দেওয়ার পরে ৪ দলিলে রেজিস্ট্রি করেন সাব-রেজিস্ট্রার।
এদিকে দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কারণে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রামগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা সিরাজ, লোকমানসহ কয়েকজন বলেন, তারা অফিসে এসে দেখেন দলিল লেখকদের কর্মবিরতি চলছে। জমি রেজিস্ট্রি করতে না পারায় তারা দুর্ভোগে পড়েন। ঈদের পর থেকে সাব রেজিস্ট্রার ছুটিতে ছিলেন বুধবার থেকে তিনি অফিস করলেও লেখকদের কর্ম বিরতির কারণে জমি রেজিস্ট্রি করতে পারিনি।
রামগঞ্জ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফাা ভূাইয়া বলেন, সেরেস্তার নামে অবৈধভাবে ৬ পার্সেন্ট নিচ্ছেন সাব-রেজিস্ট্রার। খারিজ না থাকলে দলিল আটকায় কিন্তু অতিরিক্ত টাকা দিলে রেজিস্ট্রি হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকায় কর্মবিরতি চলছে।
দলিল লেখকদের কর্ম বিরতি প্রসঙ্গে রামগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা নেই। আমি ১৫ দিন ছুটিতে ছিলাম। অফিসে যোগদানের পর জানতে পারলাম লেখকরা কর্মবিরতিতে আছেন।
দলিল লেখকদের কর্ম বিরতি প্রসঙ্গে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. শারমিন ইসলামকে মোবাইলে ফোন দিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available