চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমো অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব, এরপর কৌশলে ডেকে নেওয়া হয় বাসায়। বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয়, ব্ল্যাকমেইল করে দাবি করা হয় মুক্তিপণ। চট্টগ্রামে এমনই একটি চক্রের দুই নারী সদস্যসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ।
২৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে উপজেলার রূপনগর আবাসিক এলাকার একটি ভবন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় ওই ভবন থেকে এক ভুক্তভোগীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ চক্রের সদস্যদের মোবাইল ফোনে পাওয়া যায় আরও বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর নির্যাতনের ভিডিও।
গ্রেফতাররা হলেন- নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকার মো. আসিফ (২৩), পুরাতন চান্দগাঁওয়ের মো. মোরশেদ (২৯), রাউজান উপজেলার সাজেদ শরীফ (৪০), চন্দনাইশের আবুল হাসেম (৩৫), ভুজপুর উপজেলার নাসির উদ্দিন (৩৯), রাউজান উপজেলার জেসমিন আক্তার (৪০) এবং বাঁশখালী উপজেলার ফাতেমা খাতুন (২৬)।
ভুক্তভোগী ছাত্র শরিফ (ছদ্মনাম) জানান, ইমো অ্যাপের মাধ্যমে প্রথমে আসিফের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় শরিফের। ৩-৪ দিন কথা বলার পর তার সাথে দেখা করতে যায় শরিফ। আসিফের বাসায় ঢোকার পর পাশের কক্ষ থেকে কয়েকজন এসে তাকে বিবস্ত্র করে এবং তার ছবি তোলে এবং সমকামিতার অভিযোগ এনে টাকা দাবি করে।
এক পর্যায়ে, পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয় বুঝতে পেরে প্রতারক চক্র শরিফের পকেটে থাকা টাকা-পয়সা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনজয় কুমার সিনহা বলেন, 'ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইমো অ্যাপের মাধ্যমে আসামি আসিফের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। একদিন আসিফ ওই শিক্ষার্থীকে তার বাসায় আসতে বলেন। ওই শিক্ষার্থী আসিফের কথায় সাড়া দিয়ে ২৫ এপ্রিল রাতে রূপনগর আবাসিক এলাকার ওই ফ্ল্যাটে যান। এ সময় আগে থেকে বাসায় আরও কয়েকজন অবস্থান নেন। পরে বাসায় ঢুকলে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তাকে আটকে রেখে মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুই নারীসহ ছয়জন মিলে তাকে বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ছবি তোলেন।'
সনজয় কুমার সিনহা আরও বলেন, 'ওই শিক্ষার্থীর বিবস্ত্র ছবি তোলার পর তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন আসামিরা। অন্যথায় তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা।'
এ সময় ভুক্তভোগী তাঁর আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা চেয়েও পাননি। টাকা না পেয়ে একপর্যায়ে আসামিরা তাকে ছেড়ে দেন। তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানালে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মো. আরমান নামের এক যুবককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তিনি চট্টগ্রামে কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী শ্রীকান্ত বায়েজিদ থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন বলেও জানান ওসি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available