বরিশাল ব্যুরো: বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত ২ জনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত জনতা অপু ও সাকিব নামে দুই হামলাকারীকে পুলিশে সোপর্দ করে।
২৯ এপ্রিল সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা বাজার এলাকায় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি রাসেল মুন্সির (৪০) নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় কাউনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আটক সাকিব অভিযুক্ত রাসেল মুন্সির চাচা সত্তার মুন্সির ছেলে এবং অপু নগরীর পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর বোনসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে চরাবড়িয়া ইউনিয়নের সমর্থক বরিশাল জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম (ইটালী শহিদ), চরবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক রানা শরীফসহ কয়েকজন তাদের কাগাশুরা বাজারের নির্বাচনী কার্যালয় যায়। পথিমধ্যে যাওয়ার সময় রাসেলের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়। আর বলে, তোরা মোটরসাইকেলের নির্বাচন ক্যান করতেছোস? নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যা।
এ সময় রাসেল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য মনির মুন্সি, সাকিব মুন্সি, হৃদয় মৃধা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহেনা বেগমের ছেলে রায়হান, স্থানীয় আলাউদ্দিনের ছেলে আশিক, জুয়েল, জসীম খান ও অপুসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন মিলে রানা শরীফের ওপর অতর্কিত হামলা করে। রানাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে জেলা পরিষদ সদস্য ইটালী শহিদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায় রাসেল মুন্সি। খবর পেয়ে রানা শরীফের স্ত্রী বাড়ি থেকে ছুটে এসে তার স্বামীকে হামলা থেকে রক্ষার চেষ্টায় এগিয়ে আসলে তাকেও শ্লীলতাহানী করে সন্ত্রাসীরা। হামলাকালে তার গলায় থাকা একটি ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে তিনি অভিযোগ করে।
হামলা প্রসঙ্গে ইটালী শহিদ সাংবাদিকদের জানান, কোন কথা না বলে আমাদের পথরোধ করে রাসেল ও তার বাহিনীর সদস্যরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর প্রতিবাদ করলে আমার সাথে থাকা রানার ওপর রাসেলের নেতৃত্বে কয়েকজন হামলা করেন।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সাথে কানাঘুষা শুরু করেন। তখন আহত রানা শরীফ মোস্তাফিজুর রহমানের পা ধরে নিজের জীবন বাঁচাতে আকুতি মিনতি করলেও তিনি কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মোটরসাইকেল প্রতীকের একাধিক সমর্থক বলেন, খবর পেয়ে এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে আসলেও তার ভূমিকা ছিলো রহস্যজনক। তিনি নিশ্চয়ই অর্থের বিনিময়ে চিহ্নিত বালুখেকো রাসেলের সাথে আঁতাত করেছেন। আমরা অনতিবিলম্বে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রত্যাহার চাই।
তবে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলার বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ সভাপতি রাসেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী যে হামলা করেছেন তা পরিকল্পিত। সোমবার সারাদিন বিভিন্ন ইউনিয়নে আমার পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে আমার কর্মী সমর্থকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু অপরাধীরা কখনো শক্তিশালী হয় না। কোন মাস্তান, কোন গুন্ডা বাহিনী যতই হুমকি ধামকি দিক না ক্যান আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরাতে পারবে না। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষায় আপনারা কঠোর ভূমিকা পালন করবেন।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কাউনিয়া) মো. সরোয়ার হোসেন জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available