রাজশাহী প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, বর্তমানে গরিব, দুঃখী ও মেহনতি মানুষের প্রতি অবহেলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে এক শ্রেণির দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি ক্রমাগতভাবে বিকশিত হচ্ছে। ধনী, অতি ধনী ও গরিব মানুষ আরও গরিব হচ্ছে। এ ধরনের বৈষম্য থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে হবে।
১ মে বুধবার বিকেলে মহান মে দিবস উপলক্ষে মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলা কমিটির উদ্যোগে এই শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে রাকসুর সাবেক ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বাংলাদেশে এক ধরনের লুটেরা শ্রেণির জন্ম হয়েছে। সেই লুটেরা শ্রেণি দেশের অর্থনীতিকে নস্যাৎ করছে। তারা দেশের টাকা, দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। তাদেরকে আটকাতে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ এভাবে চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের উন্নয়নের স্বার্থে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেই ব্যাংককে এখন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। অমি মনে করি, রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের সমস্যা ও সংকট সমাধানের সমস্ত পথকে বন্ধ করে দিতেই এ ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
রাজশাহী-২ আসনের টানা তিনবারের সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে আমি অংশ নিয়েছিলাম। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত দিতে হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এখন উপজেলা নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি; একজন প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশ নিতে জামানত দিতে হচ্ছে এক লাখ টাকা। তার মানে কী? গ্রামের একজন সাধারণ মানুষ আর উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না! এ ধরনের বৈষম্যের রাজনীতি যারা গড়ে তুলছে; তাদের বিরুদ্ধে আমাদের জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে।’
রাজশাহীর বন্ধ কল-কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে জাতীয় এই রাজনীতিক বলেন, ‘রাজশাহীর কল-কারখানাগুলো বন্ধ করে অসহায় শ্রমিকদের বেকার করে দেওয়া হয়েছে। যেদিন পাটকল বন্ধের ষড়যন্ত্র হয়, সেদিন শ্রমিকদের পাশে গিয়ে কেউ দাঁড়ায়নি! আমি সেদিন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
বাদশা বলেন, ‘রাজশাহীতে এতো উন্নয়ন হয়; কিন্তু যখন পাটকল-চিনিকল বন্ধ হয়ে যায়, শ্রমজীবী মানুষ কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ে; তখন কাউকেই তাদের নিয়ে কথা বলতে দেখিনি। শ্রমিকের অধিকারের প্রশ্নে সবাই নিরব। তাই আমি শ্রমিক ভাইদের বলতে চাই, মহান মে দিবসে সবাইকে সংগ্রামের শপথ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে হবে। রাজপথে লড়াই করেই নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি সিরাজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, মহানগর সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য সাদরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম অপু।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available