মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের নিয়োগের জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ জনপ্রতি এক হাজার টাকা নিয়ে প্রশিক্ষণবিহীন এবং অন্য উপজেলার আনসার সদস্যদের দায়িত্বে নেওয়া হয়েছে। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা তাজ সুলতানা বেগম তিনজন আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের দিয়ে টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা তাজ সুলতানা।
উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় ও আনসার সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে হরিরামপুর উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। নির্বাচনের জন্য ১২ জন সদস্য করে ৬৫টি গ্রুপে মোট ৭৮০ জন সদস্যের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে, নির্বাচনে বুথের ওপর ভিত্তি করে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নির্বাচনে আনসার সদস্যদের ডিউটির জন্য প্রতিটি গ্রুপ অনুযায়ী এবং এককভাবেও জনপ্রতি এক হাজার করে টাকা নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আনসার-ভিডিপি সদস্য অভিযোগ করে বলেন, পিসি কোরবান আলী, নিয়ামদ্দিন এবং সেকেন্দার আলীর মাধ্যমে ডিউটির জন্য ১০০০ করে টাকা তুলছেন।
বাল্লা ইউনিয়নের এক গ্রুপের পিসি বলেন, আমার ১১ জনের নাম দিয়েছিলাম। তার মধ্যে আমিসহ ৬ জনের নাম ফাইনাল করেছে। এজন্য নিয়ামদ্দিনকে আমি অন্যের কাছে থেকে ধার করে ৪ হাজার টাকা দিয়েছি।
বাল্লা ইউনিয়নের দুই আনসার-ভিডিপি সদস্য নিয়ামদ্দিনকে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানান। টাকা দিচ্ছেন কেন জানতে চাইলে তারা বলেন, টাকা না দিলে তো ডিউটিতে নিবে না। তাই টাকা দিতে হচ্ছে।
গালা ইউনিয়নের দুই আনসার সদস্য বলেন, সেকেন্দার আলী যাদের নাম দিয়েছেন সবার কাছে থেকে এক হাজার টাকা করে নিচ্ছেন।
আরেক আনসার সদস্য বলেন, কোরমান আলী মোট ৬০ জনের কাছে থেকে এক হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোরমান আলী বলেন, আমি ৬০ জন লোক দিয়েছি। তবে কোনো টাকা নেইনি।
আর সেকেন্দার আলী বলেন, আমার বাছাইকৃত ২৬ জন লোক টিকেছে। এবার তারাই ডিউটি করবেন। আমি কারও থেকে টাকা নিয়েছি, কেউ বলতে পারবে না।
নিয়ামদ্দিন বলেন, পোষাক আনা-নেওয়া ও বাড়িতে পৌঁছে দিতে ৩-৪০০ টাকা খরচ নেয় অনেকেই। আমি কোনো টাকা নেইনি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে এক হাজার করে টাকা নেওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা। কেউ বলে থাকলে, আমাকে ফাঁসানোর জন্য বলেছে। পরে তিনি প্রতিবেদককে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে হরিরামপুর উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা তাজ সুলতানা বেগম বলেন, গ্রুপ বাছাইকরা হয়েছে। যারা প্রশিক্ষণে টিকেছে হরিরামপুর থেকে তাদেরকেই নেয়া হয়েছে। যারা টিকেনি তাদের নেওয়া হয়নি। তাই অন্য উপজেলা থেকে লোক আনা হয়েছে।
পরে তাকে টাকার বিনিময়ে কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোক নেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, যারা আগে ডিউটি করেছে এমন লোককেই নিয়েছি। তবে কয়েকজন গরিব মানুষকেও নেওয়া হয়েছে। তবে সেটা ঢালাওভাবে নয়। আর টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। যাদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, আমি তাদের ডাকবো৷ তারা যদি টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তাদের গ্রুপই বাতিল করে দিবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available