পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে ভূমি সেবা। টাকা ছাড়া এক পা এগোয় না ভূমি-সহকারী কর্মকর্তা জাহিদুল। মেয়াদের আগে সরকারি বন্দোবস্ত জমি বিক্রি, ভুয়া দাখিলা দিয়ে নিজের পকেট ভারি করাসহ বিস্তার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তার এসব কর্মকাণ্ডের বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক।
অভিযোগ রয়েছে ২৭নং জে, এল ইউসুফপুর মৌজার বিএস ৩৯১নং খতিয়ানের বিএস ২৫৬, ৩১৩নং দাগের ১৫০ শতক জমির খাজনা প্রদান করার জন্য ভুক্তভোগী সিদ্দিকুর রহমান মহিপুর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের নিকট গেলে তিনি কাগজ পত্র যাচাই-বাছাই করে ৩০ হাজার টাকা দর কষলে তিনি টাকা প্রদান করেন। পরে ১২ হাজার ৬২১ টাকার একটি ভুয়া অনলাইন দাখিলা প্রদান করেন। যেটার নাম, দাগ, খতিয়ান সম্পূর্ণ ভিন্ন। অপর এক ভুক্তভোগীর সাথেও ঠিক এরকমই ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, গত ১ বছর ৩ মাস আগে তৈয়বুর রহমান ৪০.২ শতক জমির খাজনা দিতে আসলে তিনি তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ৮৮ টাকার একটি ভুয়া অনলাইন দাখিলা প্রদান করেন, যার কিউ আরে নাম আসে নাজমা বেগম। এরকম অহরহ জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাসখানেক আগে বিএসর গেজেট আসলেও তিনি কোনও অদৃশ্য শক্তির বলে ভূমি সেবাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেটা ১ বছর ৩ মাস আগে প্রদান করেন। যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাখঢাক না করেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহিদুল, ঘুষ-দুর্নীতির ‘রসের হাঁড়িতে’ মজে অনিয়মকে রূপ দিয়েছেন নিয়মে! আর এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী লোকজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো ফল হয় না। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনও দুর্নীতির দুষ্টচক্রের পক্ষেই উলটো সাফাই গান, এমন নেতিবাচক নজিরও তাদের ফেলে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না। নামজারি (নাম খারিজ), ডিসিআর ও দাখিলার জন্য তাকে আলাদা আলাদা টাকা দিতে হয়। কখনো টাকা দিলেও জুটে না নামজারি। খাজনার দাখিলার জন্য (ভূমি উন্নয়ন করের রসিদ) সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়েও অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও আবার রসিদ দেয়া হয় সরকারি হিসাবেই।
বিএস গেজেট না থাকলে প্রতারণা করে দেওয়া হচ্ছে দাখিলা, নেওয়া হচ্ছে টাকা, যেটা জমা হচ্ছে না সরকারি কোনও কোষাগারে, টাকা দিলেই সব অনিয়ম যেন নিয়ম হয়ে যায় তার কাছে।
এসবের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা।
এবিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি-সহকারী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কাগজ ঠিক করে দেওয়ার কথা বলেন এবং নিউজ না করার অনুরোধ জানান।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ বলেন, এটা গুরুতর অপরাধ, বিএস গেজেট আসার আগে দাখিলা দেওয়া বিষয়টা আলাদিনের চেরাগের মতোই, খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, অতি দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available