নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে শ্রেণি কক্ষে ঢুকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় মো. সোহেল নামের এক শিক্ষককে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দিয়েছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মো. হাসান (৩৪)। তিনি উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক।
৫ মে রোববার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে, একই দিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার ওই ফাজিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটে। হামলাকারী মো. রাজু (২৪) ও আবু নোমান (২৫) মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা।
মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মো. শহিদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে বহিরাগত রাজু জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে আসে। এরপর সে মাদ্রাসার ছাত্র নোমানের সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। ওই সময় ছাত্রী তার ভয়ে শ্রেণি কক্ষে থাকা বেঞ্চের নিচে লুকিয়ে যায়।
এরপর ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীর অন্য সহপাঠীরা বাধা দিলেও রাজু তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। খবর পেয়ে মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল এগিয়ে আসলে ইভটিজার রাজু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মাদ্রাসার ভিতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। তাৎক্ষণিক একই মাদ্রাসার শিক্ষক হাসান এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করলে তার সাথেও ইভটিজারদের বিরোধ দেখা দেয়।
ওই বিরোধের জের ধরে বিকেল ৫টার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে ৭/৮ জন কিশোর গ্যাং সদস্য তার গতিরোধ করে। পরে তারা শিক্ষক হাসানের ওপর হামলা চালায়। তখন হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে বেধড়ক পেটায়। এতে তার দুই হাত ভেঙে যায়।
হাসপাতালের অর্থোপেডিক ডাক্তার আবদুর রহমান বলেন, তার একটি হাতে অপারেশন করে পাত বসানো হয়েছে। অন্য একটি হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। তার দুটি হাতই ভেঙে গেছে। আহত শিক্ষকের শাশুড়ি ও শ্বশুর বলেন, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা এ হামলা চালায়। বর্তমানে জেলা শহরে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোম্পানিগন্জ থানার ওসি জানান, এখনও তিনি অভিযোগ পাননি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সাংবাদকিদের এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, এটা অত্যন্ত খারাপ কাজ। অপরাধী যেই হোক আইন অনুসারে বিচার হোক। আর আহত শিক্ষকের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি। অপরাধকারীদের কোন ছাড় নেই বলেও জানান এ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available