কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: কুমিল্লা ইবনেসিনা ডায়াগনোস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় চাঁদপুরের কচুয়ার কুলসুমা আক্তার (৩৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৭ মে মঙ্গলবার এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের মাসনিগাছা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী চার সন্তানের জননী কুলসুমা আক্তারের ২১ এপ্রিল প্রচন্ড পেট ব্যথা শুরু হলে কচুয়ার রহিমানগর বেসিক হসপিটালের ডাক্তার গাজী মাহফুজার পরমার্শে কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে জরায়ুর আলট্রাসনোগ্রাম টিভিএস (ফেলভিস) পরীক্ষা করান। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে কুলসুমা আক্তারের জরায়ুতে টিউমার আছে বলে সনাক্ত করেন চিকিৎসক।
এরপর ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিকে কর্মরত গাইনি বিশেষজ্ঞ সার্জন ফাহমিদা সুলতানা মিলির পরামর্শ ও চিকিৎসা নেন কুলসুমা। ওইদিন রাতে কুলসুমা আক্তারের তীব্র পেট ব্যথা শুরু হলে ডাক্তার মিলির কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে ডাক্তার মিলি পেটের ব্যথা প্রশমনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করার পরামর্শ দেন। ওইদিন রাতে ডাক্তার মিলি ইবনে সিনার পার্শ্ববর্তী ইনসাফ মেডিকেলে তার অপরাশেন করান। অপারেশন করতে গিয়ে কুলসুমার জরায়ুতে কোনো ধরনের টিউমার খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ওই অবস্থায় অপরেশন সমাপ্ত করেন চিকিৎসক।
অপারেশন করার দুই দিন পর কুলসুমার পেট ব্যথা ও অপারেশনের ব্যথা আরো তীব্র হলে চিকিৎসকরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কুলসুমা আক্তারকে পুনরায় আলট্রাসনোগ্রাম টিভিএস(ফেলভিস) পরীক্ষা করালে জরায়ুতে কোনো ধরনের টিউমার নেই বলে তারা নিশ্চিত করেন এবং বুকের নিচের টিউমার আছে বলে সনাক্ত করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি দেখে প্রথম গ্রিনলাইফ হাসপাতালে ৩ দিন কুলসুমাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে মুগদা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ মে ভোররাতে কুলসুমার মৃত্যু হয়।
কুলসুমার ভাই শাহজাহান ইসলাম খোকন জানান, ‘কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ভুল রিপোর্ট ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার বোন মারা যায়। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
কুলসুমার দেবর একরামুল হক জানান, ‘কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে কুলসুমার ভুল চিকিৎসা ও ভুল অপারেশন হওয়ায় তাঁরা আমাদের নিকট থেকে অপারেশনের বিল নেয়নি।’
কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনোস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের চিকিৎসবক ফাহমিদা সুলতানা মিলি জানান, ‘রোগীর দুটি আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ও শারীরিক অবস্থায় দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমিসহ সার্জন রণি অপারেশন করতে গিয়ে দেখতে পাই, রোগীর জরায়ুতে কোনো টিউমার নেই। তাৎক্ষণিক ওই ঘটনা সর্ম্পকে রোগীর গার্ডিয়ানকে অবহিত করে অপারেশন ক্লোজ করে দেই।’
এ দিকে কুমিল্লা ইবনেসিনা ডায়াগনোষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের ব্যবস্থাপক প্রশাসন গোলাম মোর্তজা জানান, ‘আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিভিএস (ফেলভিস) পরীক্ষা করেছি।‘
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available