ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর সদর উপজেলার খলিলপুরে বাবার বিরুদ্ধে কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এতে গর্ভবতী হয়ে সম্প্রতী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে ওই কিশোরী। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের করলে বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযুক্তের নাম মো. নাছির শেখ (৪৫)। সে পেশায় রিকশা চালক। গত রাতে মামলা দায়ের হলে ২১ মে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে খলিলপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালি থানার উপপরিদর্শক মাহাবুবুল করীম।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিশোরীর মা স্থানীয় একটি জুট মিলে কাজ করেন। সেখানে মাঝে মাঝেই থেকে রাত্রিকালীন কাজ করতে হয়। ওই সময়ে বাড়িতে ২ মেয়ে ও বাবা থাকতো। এক কক্ষে দুই মেয়ে অপর কক্ষে বাবা থাকতো। গত ১৫ মে যথারীতি সকলে ঘুমালে ওই কিশোরী কন্যাকে ডেকে নিজ কক্ষে নিয়ে যায় বাবা নাছির শেখ। পরে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে ওই কিশোরীকে। এসময় চিৎকার করলে ছ্যানদা (একধরনের ধারালো অস্ত্র) দিয়ে ভয় দেখায় মেয়েকে। এরপরে নিয়মিত চলতে থাকে ধর্ষণ। এক পর্যায়ে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পরলে বাবাকে জানায় সে। নাছির ওই কিশোরীকে জানায়, ‘সমস্যা নাই, ছেলে হলে আমরা পালবানে আর মেয়ে হলে বেইচা দিবানে’।
গত ১৫ মে ওই কিশোরীর প্রসব বেদনা উঠলে তাকে ফরিদপুরের মাতৃমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওই দিনই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী। ওই হাসপাতালেই একজনের কাছে কন্যা শিশুকে বিক্রি করে পরদিন বাড়ি যায় কিশোরী ও তার পরিবার। এসময় এলাকাবাসী বাচ্চা নিয়ে নানা প্রশ্ন করলে জানাজানি হয় ঘটনাটি।
পরে ফরিদপুর কোতয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত করে। কিশোরীর বিক্রিত কন্যাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেয়। এরপরে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে আসামি করা হয় বাবা নাছির শেখকে।
মামলার এজাহার হাতে পেয়ে মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ, একই সাথে গ্রেফতার করা হয় বাবা নাছির শেখকে।
এদিকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর সাথে স্থানীয় আরো দুই ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক ছিল। যদিও কিশোরী ও তার মা বাবাকে আসামি করেছে, কিন্তু পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
ফরিদপুর কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাসানুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক ভাবে কিশোরী ও তার মা বাবার কথা বলেছে। আমাদের তদন্ত চলছে, একই সাথে প্রযুক্তিগত কিছু তদন্ত হবে। ওই কিশোরী, সদ্য ভূমিষ্ট কন্যা সন্তান ও আসামি নাছিরের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ঢাকা পাঠানো হবে। ডিএনএ রিপোর্ট পেলে নিঃসন্দেহে বলা যাবে কে অপরাধী। আপাতত তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available