যশোর প্রতিনিধি: যশোরের শার্শায় এক গৃহবধূ (২৫)কে চিকিৎসার নামে বাড়িতে নিয়ে কবিরাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
এক সন্তানের জননী ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী জানান, স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে সেই ঘটনা রফাদফা করেছেন।
উপজেলার গোগা ইউনিয়নের আমলাই গ্রামের এই ঘটনায় অভিযুক্ত কবিরাজের নাম আজিজুল ইসলাম (৫০)। তিনি কবিরাজি চিকিৎসার নামে বিভিন্ন রোগের ঝাড়ফুক দিয়ে থাকেন।
২১ মে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে বলেও জানান ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী। পরের দিন বুধবার স্থানীয় মাতব্বরা সেই ঘটনা নিয়ে সালিশি বৈঠকে বসেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী জানান, ওই দিন রাতে আমার স্ত্রী তাকে নিয়ে পাড়ার কবিরাজ আজিজুলের কাছে যেতে বললে আমি নিয়ে যাই। পরে কবিরাজের কাছে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য রেখে আমি একটু বাজারে গিয়ে চা সিগারেট খেয়ে আবার কবিরাজের বাড়ি এসে বউকে নিয়ে নিজের বাড়ি চলে আসি। পরে কয়েকজন আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে বাজারের ক্লাবে ডেকে নিয়ে যায়। গিয়ে দেখি কবিরাজ আজিজুলকেও ক্লাবে নিয়ে আসা হয়েছে।
পরে আমাদের মেম্বার সাইফুল ও স্থানীয় মাতব্বররা আমার স্ত্রীকে বলেন, আজিজুল কি তোমাকে ধর্ষণ করেছে? স্বীকার করো, কিন্তু সে স্বীকার করেনি। তখন আজিজুল কবিরাজের কাছে তারা জানতে চান, সে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে কিনা। সেও অস্বীকার করলে মাতব্বরা আমাকে, আমার স্ত্রীকে ও আজিজুল কবিরাজকে পেটায় এবং সারারাত ক্লাবে আটকে রাখে। পরে সকালে আমার স্ত্রী ও আজিজুল কবিরাজ দুজন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বলে দু জনই স্বীকার করলে স্কুল মাঠে গ্রাম্য শালিস বসে। সেখানে আমাদের তিনজনকে মারধর করে এবং আমার ১০ হাজার ও আজিজুল কবিরাজকে ১০ হাজার মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে আমাদের ছেড়ে দেয়।
অভিযুক্ত আজিজুল কবিরাজ জানান, ঘটনাটি মিথ্যা। শরিফুল তার বউকে নিয়ে আমার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গেলে আমি বাজারে চলে আসি। পরে বাজার থেকে আমাকে ক্লাবে ডাকে আমাদের মেম্বার সাইফুল। পরে মাতব্বররা বলছে আমি নাকি শরিফুলের বউকে ধর্ষণ করেছি। বিষয়টি মিথ্যা বললে ওখানে আমাকে প্রচুর মাইরপিট করা হয় এবং সারারাত ক্লাবে আটকে রাখে। পরে সকালে স্কুল মাঠে শালিস বসলে আমাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, স্থানীয় জনতা শরিফুল ও তার স্ত্রী এবং আজিজুল কবিরাজকে ক্লাবে আনলে তারা শারীরিক সম্পর্ক করেছে বলে স্বীকার করে এবং এ সম্পর্কটা তাদের দু জনের সম্মতিতে হয়েছে বলেও স্বীকার করে। পরে রাতে শালিস না বসে সকালে স্কুল মাঠে চৌকিদার এবং স্থানীয় মাতব্বরদের সমন্বয়ে একটি শালিসের মাধ্যমে তাদের উভয়কে ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে তাদেরকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারটা আমার জানা নাই। এ ব্যাপারে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ ও করেনি। তবে বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখছি বলে তিনি জানান।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available