রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছয় হাজারের বেশি ঘরবাড়ি-প্রতিষ্ঠানের। ভেসে গেছে দেড় হাজার পুকুর ও ঘেরের মাছ। মারা গেছে পাঁচ শতাধিক গবাদিপশু। উপড়ে পড়েছে বিপুল সংখ্যক গাছপালা। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে ৪ দিন ধরে।
প্রাথমিক এমন তথ্য জানিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আরও জানা যাবে বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, জোয়ারের পানি বেড়ে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরো উপজেলায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র মতে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ছয় হাজার ২২০টি বসতঘর ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে।
তবে এর মধ্যে কয়টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং কয়টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত সেই তথ্য তৎক্ষণিক জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ৫৭৭টি গবাদিপশু মারা গেছে বলে জানা গেছে।
মৎস্য চাষীদের সাড়ে ছয় কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে জানা গেছে। জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় কোথাও ভাঙা বাঁধ দিয়ে, কোথাও বাঁধ উপচে এবং কোথাও বেড়িবাঁধ নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া বেড়িবাঁধের বাহিরে থাকা নিচু এলাাকার প্রায় সবগুলো ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
মৎস্য বিভাগ বলছে, দুই হাজার ২২০টি পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ছয় কোটি ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে মৎস্য চাষীদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কারণে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের অনেক আগ থেকেই কোথাও বাঁধ ভাঙা ছিল। কোথাও বাঁধ নিচু ছিল এবং কোথাও নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোথাও কোথাও বাঁধ নেইও।
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, বাঁধের ভেতরে এই মুহূর্তে পানিতে প্লাবিত। পানি কমলে বাঁধের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানানো যাবে।
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো: মহিব্বুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের প্রাক্কলন প্রস্তুত করে পাঠানোর জন্য কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। রাঙ্গাবালীর দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ, শিশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ, ২০০ টন চাল এবং ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available