শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলার উথুলী ইউনিয়নে নয়াবাড়ি বাজার হতে দক্ষিণ আরা জয়নুদ্দিন মাস্টার বাড়ি পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামীণ সড়কে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে সোলিং করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার বাবুলের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১০০০ মিটার দৈর্ঘ ও প্রস্থ্য ৩ মিটার রাস্তার জন্য মন্ত্রালয়ের বিশেষ বরাদ্দে তিনটি প্রকল্প (কাবিখা) নয়াবাড়ি বাজার হতে মুন্নাফ মৃধার বাড়ি পর্যন্ত ৩০ মে. টন, মুন্নাফ মৃধার বাড়ি হতে আক্কাস মুন্সির বাড়ি পর্যন্ত ৩০ মে. টন এবং পুনরায় নয়াবাড়ি বাজার হতে জয়নুদ্দিন মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত ৬ মে. টন, সর্বমোট ৬৬ মে. টন চাউল রাস্তা পুন:নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়।
কিন্তু প্রকল্পের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আব্বাস আলী, স্থানীয় মেম্বার খবির উদ্দিন, শাহীনুর ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব কৃষ্ণ মিলে গ্রামের হতদারিদ্রদের কাবিখা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে এবং তারা অর্থনৈতিক লাভবান হয়ে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু ফেলে নাম মাত্র রাস্তা নির্মাণ করেন। যা রাস্তার উচ্চতা অনুযায়ী স্লোভ ও প্রস্থ্য সঠিকভাবে না হওয়ায় বৃষ্টি ও বর্ষার পানিতে মাটি নেমে যাবে নদীতে এমনটাই বললেন এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা যায়, উপরে উল্লেখিত রাস্তার জন্য গত অর্থ বছরেই পুনরায় ইট সোলিংয়ের জন্য মন্ত্রালয়ের বিশেষ বরাদ্দ দেয় ৮৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা। যার দৈর্ঘ ১ হাজার মিটার ও ৩ মিটার প্রস্থ। রাস্তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য ১৬৫ মিটার ব্রিক প্যালাসাইডিং, ১০০ মিটার ড্রামসীট প্যালাসাইডিং ও ৭ মিটার ইউ ড্রেন ও ৬ ইঞ্চি বালুর বেড ধরা থাকে।
কিন্তু রাস্তার কাজটি গত অর্থ বছরে শেষ না করে চলিত অর্থ বছরে ঠিকাদার বাবুল সিডিউল মোতাবেক কাজ না করে নিম্নমানের ইট দিয়ে তৈরি করছে রাস্তা। ঠিকাদার ব্রিক্স প্যালাসাইডিং, ড্রামসীট প্যালাসাইডিং ও ইউ ড্রেন তৈরি না করে রাস্তার বেডে দায়সারাভাবে বালুর পরিবর্তে ধুলামাটি বিছিয়ে দরমুজ দিয়ে মাটি না পিটিয়ে সমান না করে ইট সোলিংয়ের কাজ করে যাচ্ছে। যা ভবিষ্যতে রাস্তার জন্য হুমকি স্বরূপ, এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।
কদ্দুস, মজিদ, আরশেদসহ একাধিক স্থানীয়রা বলেন, এই রাস্তাটা আমাদের খুবই দরকার। আমরা নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছি রাস্তার জন্য। সরকার এই রাস্তার জন্য গত অর্থ বছরে যে পরিমাণ বাজেট দিয়েছে তাতে খুব সুন্দর রাস্তা হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদাররা তা না করে নিজের সুবিধামত ব্রিক্স প্যালাসাইডিং, ড্রামসীট প্যালাসাইডিং ও ইউ ড্রেন তৈরি না করে রাস্তার মাটি দরমুজ দিয়ে না পিটিয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে সোলিংয়ের কাজ করে যাচ্ছে।
ঠিকাদার বাবুলের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান, এই কাজটা আমার না, যে ঠিকাদার কাজটি পেয়েছিল সে করবে না বিধায় পিআইও আমাকে দিয়ে কাজটি করাইতেছে। কাজটি যেভাবে করার কথা আমি সেইভাবেই করছি, আর এই কাজে আমি কোনো নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছি না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব কৃষ্ণের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, রাস্তার কাজে কিছু অনিয়ম থাকায় আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। যে সমস্ত ইট নিম্নমানের ছিল তা ফেরত দিয়ে ভালমানের ইট আনা হয়েছে। এরপর রাস্তাটি দেখার জন্য ঢাকা থেকে টিম এসে পরিদর্শন করে রাস্তা তৈরির জন্য দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। তারপরও যদি রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, রাস্তার কাজে যদি কোনো অনিয়ম থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available