মেহেরপুর প্রতিনিধি: টানা দুই দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন রয়েছিলো মেহেরপুর জেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষ। পাওয়া যায়নি মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও।
গত ২৬ মে রোববার সন্ধ্যায় শুরু হয় রেমালের প্রভাব। তখন থেকেই জেলার গ্রামগঞ্জের মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। গতরাতে মেহেরপুর জেলা শহর ও গাংনী পৌরবাসী সামান্য বিদ্যুৎ পেলেও এখন পর্যন্ত গ্রামগুলোতে চলছে বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার হিড়িক।
গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, রেমালের প্রভাব পড়ার আগে থেকেই আমরা বিদ্যুৎবিহীন হয়েছি। সামান্য বৃষ্টিপাত শুরু হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। দিনের অধিকাংশ সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না। মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ এলেও খুব অল্প সময়ের জন্য থাকছে।
নওপাড়া গ্রামের রহমত আলী বলেন, দুই দিন যাবৎ বিদ্যুৎ নেই। চার্জের অভাবে মোবাইল ফোনগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের বাড়িতে পানি নেই। মটারে পানি তোলার কারণে বাড়ির টিউবওয়েলগুলো অকেজো। বিদ্যুৎচালিত মটারের উপর পানি নির্ভর করে। দুই দিন বিদ্যুৎ না থাকায় কার্যত অকেজো হয়ে গেছে জীবন। কিন্তু কালকে বিদ্যুৎ আসলেও যাওয়া আসাতে কোনো উপকার হচ্ছে না।
মুজিবনগর উপজেলার খানপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, দুই দিন যাবৎ বিদ্যুৎ না থাকায় চরম অস্বস্থিতে ছিলাম আমরা। ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং যেনো নিয়মে পরিণত হয়েছে। দুই দিন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমদের মোবাইল ফোনগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার রাঁধাগোবিন্দপুর গ্রামের সাহার আলী বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেছে। দুই দিন পর বিদ্যুৎ আসলেও। গ্রাম গঞ্জ এখন বিদ্যুৎ যাচ্ছে ও আসছে। বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের পোল্টি খামারি মিজানুর রহমান জানান, রোববার রাত থেকে দুই দিন বিদ্যুৎ নেই। খামারের মুরগির বাচ্চা নিয়ে বিপকে পড়ে গেলাম। তার ভিতরে কাল থেকে বিদ্যুৎ পেলেও বিদ্যুৎ যাওয়া আসাতে মুরগির বাচ্চা নিয়ে বিপকে পড়েতে হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক (ডিডি) কৃষিবিদ বিজয় কুমার হালদার জানান, রেমালের প্রভাবে সৃষ্ঠ ঝড়ে জেলায় ৪৫ হেক্টর জমির কলাক্ষেত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিরুপণ করা হয়েছে। তবে গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশির্বাদ হয়েছে। মাঠের অন্যান্য ফসল বিশেষ করে পাটের ব্যাপক উপকার হয়েছে।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের এজিএম কম সবুজ মোল্লাহ বলেন, রেমালের প্রভাবে এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের একটি খুঁটি ক্ষদিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া লাইনের উপর প্রচুর পরিমাণ গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। যে কারণে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। গাছের ডালপালা অপসারনের পর লাইন দিতে পারবো। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি লাইন মেরামত করে সংযোগ ফিরিয়ে আনতে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার স্বদেশ কুমারের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available