নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী। তাদের ৭ জনই আওয়ামী লীগের। আর বিএনপি’র একজন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আওয়ামী লীগের অধিক প্রার্থী থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন দল থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি ওই নেতা।
চতুর্থ ধাপে ৫ জুন এ উপজেলায় নির্বাচন। প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- আল আমিন (মোটর সাইকেল), কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটো (কৈ মাছ), নুরুন্নাহার বেগম (টেলিফোন), ফারুক আহমেদ (আনারস), মোহাম্মদ শাহ আলম (কাপ-পিরিচ), মো. আবদুল মতিন (হেলিকপ্টার), এড. সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস (ঘোড়া) এবং হাবিবুর রহমান (দোয়াত-কলম)। এর মধ্যে ফারুক আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই আওয়ামী লীগের। এদের মধ্যে জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটো গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তবে এবার আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সমর্থন দেয়নি কোনো প্রার্থীকেই। যে যার মতো নির্বাচন করছেন।
অন্যদিকে বিএনপির ২০১৫ সালের উপজেলা কমিটিতে উপদেষ্টা ছিলেন ফারুক আহমেদ। উপজেলার ভোটের মাঠে এবারই প্রথম নাম শুনছেন এলাকার মানুষ ম্যান পাওয়ার ব্যবসায়ী ফারুকের। ধনাঢ্য এই প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রচুর পয়সা-কড়ি ছড়াচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
এখানকার ভোটের লড়াইয়ে টাকার জোরকে ফ্যাক্টরও মনে করছেন ভোটাররা। অন্যদিকে নবীনগর পৌর এলাকায় কোনো প্রার্থী নেই। পৌর এলাকার ভোট কার দখল বেশি থাকে এবং প্রার্থী নিজের এলাকা থেকে কতো ভোট টানতে পারেন, তার ওপরই নির্ভর করবে চূড়ান্ত লড়াইয়ে কে এগিয়ে যাবেন।
তবে সাধারণভাবে করা হিসেবে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আল-আমিন ও বিএনপির ফারুক আহমেদ ভালো অবস্থানে রয়েছেন। উত্তরাঞ্চলে আল-আমিন এবং দক্ষিণাঞ্চলে ফারুক ছাড়া আর কোনো প্রার্থী নেই। বিএনপির আর কোনো প্রার্থী না থাকায় ফারুক বিএনপির ভোট টানতে পারেন।
নবীনগর পৌর এলাকার শ্রমিক বিল্লাল মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের এত প্রার্থী। তারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে আছেন। এখানে দলের বিষয় নয়, যে সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন তাকেই ভোট দেবো।
হাবিকুল ইসলাম বলেন, অর্থই অনর্থের মূল। ফারুক আহমেদ অনেক টাকার মালিক। তাই মানুষ তার পেছনেই ছুটছেন। আওয়ামী লীগের এত প্রার্থী, সবাই ভোটে টানাটানি করবে। মাঝখান দিয়ে ফারুক সাহেব চলে যাবেন।
ভোলাচং গ্রামের রাখাল ঋষি জানান, আনারস মার্কার পক্ষে অনেকে কাজ করছে। টাকাও ছড়াচ্ছে তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও নবীনগর পৌরসভার মেয়র এডভোকেট শিব শংকর দাস বলেন, ‘দলের প্রার্থীকেন্দ্রিক আমাদের অনেক ভাগ হয়ে আছে। যদিও আমাদের ভোট বেশি। অন্যদিকে ফারুক একক ভোট টানবে। আমাদের এন্টি ভোটগুলো তার বাক্সে যাবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসতে পারিনি।’
ফারুক আহমেদ বলেন, তিনি বিএনপির সমর্থক। তবে তাকে যে দলের উপদেষ্টা করা হয়েছিল, সেটি তার জানা নেই। ভোটের মাঠে নতুন হলেও অনেক আগে থেকেই এলাকায় সামাজিক বহু কর্মকাণ্ড করে এসেছেন। এলাকায় বহু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। করোনাকালে ৪০-৫০ লাখ টাকার সহায়তা দিয়েছেন। তবে টাকা দিয়ে ভোটের মাঠ কব্জা করার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আল-আমিন বলেন, সবদিক থেকে আমার অবস্থাই ভালো।
আরেক প্রার্থী কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটো বলেন, কেউ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে, কেউ ঢাকা থেকে এসেছেন নির্বাচন করতে। তাছাড়া আনারসের প্রার্থী অনেক টাকা-পয়সা খরচ করছেন। তবে আমি আশাবাদী মানুষ, বিচার-বিশ্লেষণ করেই তাদের ভোট দেবেন।
সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, ‘ষড়যন্ত্র আর জোর না করলে আমিই পাস করবো।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর খান বলেন, ‘আমাদের মাঝে বিরোধ নেই।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী শাহান বলেন, ‘যে যার মতো নির্বাচন করছে। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’
নবীনগর উপজেলায় ৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন (বৈদ্যুৎতিক বাল্ব), মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ (পালকি), মোহাম্মদ মোমেনুল হক (উড়োজাহাজ), মোহাম্মদ সাইফুল আলম ভূঁইয়া (তালা), মো. খাইরুল আমিন (মাইক), মো. মেহেদী হাসান (চশমা), মো. মোশাররফ হোসেন সরকার (বই), সঞ্চয় চন্দ্র সাহা (টিয়া পাখি) এবং সারোয়ার আহম্মেদ ভূঁইয়া (টিউবওয়েল)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদা আক্তার শিউলি (ফুটবল), মোছেনা বেগম (প্রজাপতি) এবং সাবিনা ইয়াছমিন (কলস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available