রংপুর ব্যুরো: রংপুরের পীরগঞ্জে চালের গুড়া ও ময়দা মিশিয়ে বসুন্ধরা কোম্পানির বস্তায় অসদুপায়ে প্যাকেট করে বাজারজাত করার তথ্য সংগ্রহের সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় তিন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছে। ৩ জুন সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে।
পীরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাজী মিলন ও স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, অসৎ উপায়ে বসুন্ধরা কোম্পানির বস্তা ব্যবহার করে চালের গুড়া ও ময়দা মিশিয়ে অনুমোদনবিহীন ভেজাল ভুসি তৈরির অভিযোগে গোডাউনের তথ্য সংগ্রহ করতে যায় মাই টিভি ও এশিয়ান টিভি এবং স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তোলার সময় মাই টিভির রংপুর জেলা করেসপন্ডেন্ট মাহমুদুল হাসান ও এশিয়ান টেলিভিশনের পীরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান মিলন এবং রংপুর থেকে প্রকাশিত ৫২ আলো পত্রিকার রিপোর্টার মেফতাহুলসহ তিন সাংবাদিককে গোডাউনে আটক করে জিয়া ও তার বাবাসহ ভেজাল ভুসি কারখানার লোকজন।
এসময় দেশিয় অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে সাংবাদিকদেরকে বেধড়ক মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের চিৎকারের স্থানীয়রা ও পুলিশ এসে আহতাবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
পীরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাজী মিলন বলেন, আমরা তাৎক্ষণিক বিষয়টি প্রশাসনের সবাইকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় মাই টিভির মাহমুদুল হাসান বাদি হয়ে পীরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা চাই হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
মামলার বাদি ও আহত সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আলহাজ্ব কুদ্দস ভিলার নিচ তলায় একটি গোডাউনসহ আশেপাশের আরও দুইটি গোডাউনে দিনে-রাতে চালের গুড়া-ময়দা মিশিয়ে বসুন্ধারা কোম্পানির বস্তায় প্যাকেটজাত করে বাজারজাত করে আসছেন চোপড়া এলাকার পিলা বাড়ি মৌজার সোলায়মানের ছেলে ও মহিলার ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক জিয়া নামের এক অসাধু ব্যবসায়ী। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ভেজাল ভুসি তৈরি কারখানায় আমিসহ আরও দু’জন সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ফুটেজ নেওয়া অবস্থায় জিয়া ও তার বাবা এবং শালকসহ ৪ থেকে ৫ জন গোডাউনের শাটার নামিয়ে দিয়ে আমাদের ব্যবহ্রত প্যানাসনিক পিভি ১০০ ও এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধির একই মডেলের দুইটি ক্যামেরা ৬টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। রডের পাইপ দিয়ে আমাদেরকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমর সঙ্গী মির্জানোর মিলনকে বাহিরে এনে এবং আমাদের দু’জনকে গুদাম ঘরে আটকে রাখে। বাহিরের রাস্তায় প্রকাশ্য হার্টের লোকজনের সামনে মিজানুর মিলনকে পিটাতে থাকলে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়রা আমিসহ ৫২ আলোর সাংবাদিক অপর সঙ্গী মেফতাহলকে গুদাম ঘর থেকে উদ্ধার করে।
এবিষয়ে পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিয়েছি।
এবিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান ও জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী জানান, সাংবাদিকদের হামলার ঘটনাটি আমরা শুনেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা সকল পদক্ষেপ নিয়েছি।
যেই অপরাধ করুক, তাদেরকে কখনো ছাড়তে হবে না বলে জানান তারা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available