নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলে ভুল সিজারে প্রসূতি আসমা খানম (২০) এর মৃত্যুর অভিযোগ করেছে তার পরিবারের। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের অভিযোগ, উন্নত চিকিৎসার কথা বলে রোগীর স্বজনরাই জোর করে তাকে অন্যত্র নিয়ে যায়। এরপর ওই রোগীর মৃত্যু ঘটে। নিহত আসমা খানম কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আলাল শেখের মেয়ে।
নিহত আসমার বোন হুসনা খানম বলেন, আসমা খানম গত ২৮ মে মঙ্গলবার সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নড়াইল শহরের পপুলার সার্জারী এন্ড নার্সিং হাসপাতালে ভর্তি হন। দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জি. এম নুরুজ্জামান তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। আসমা পুত্র সন্তনের জন্ম দেন। রোগীকে বেডে দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর থেকে ব্লিডিং শুরু হয়। এর এক ঘণ্টা পর ডাক্তার নুরুজ্জমান আবারও রোগীর অপারেশন করেন। এর ফলে রোগীর ব্লিডিং আরও বেড়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৩০ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা আইসিইতে ভর্তির পরামর্শ দিলেও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, কাকরাইল শাখায় ভর্তি করা হয়। পরদিন সকাল থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় ১ জুন শনিবার রোগীকে মুগদা হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। আসমার ২০ মাস বয়সের একটি পুত্র সন্তান আছে। এটি ছিলো তার দ্বিতীয় বাচ্চার সিজার।
নিহত আসমার বোন হুসনা খানম আরও বলেন, নড়াইলের সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জি. এম নুরুজ্জামান আমার বোনের দ্বিতীয় বার অপারেশন করলেও প্রথমে তাদের কিছুই জানাননি। পরে ডাক্তার জানিয়েছেন,রোগীর জরায়ুতে টিউমার ছিল। তাই ব্লিডিং বন্ধ করতে অপারেশন করেছেন। রোগীর মাংসের ভিতর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে রক্ত ছেড়ে দিচ্ছিল। ঢাকার চিকিৎসকরা বলেছেন ‘আপনারাতো রোগীকে মেরেই নিয়ে এসেছেন।’
আসমার বাবা আলাল শেখ বলেন, তার মেয়েকে নড়াইল থেকে ৪ ব্যাগ এবং ঢাকায় ৩০ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। ধার দেনা করে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। ডা. জি. এম নুরুজ্জামানের ভুল অপারেশনে তার মেয়ের মৃত্যু ঘটেছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জি. এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘প্রসূতির অপারেশনে কোথাও ভুল ছিল না। রোগীর অবস্থা একেবারে খারাপ ছিল না। সে হেঁটে চলেফিরে বেড়াচ্ছিল। রোগীর স্বজনরাই জোর করে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available