স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: প্রতিনিয়ত গ্রামের সেবা প্রত্যাশিরা আসেন ইউনিয়ন পরিষদে। এলাকাবাসী নাগরিক সনদ, জন্মনিবন্ধন, ত্তরাধিকার সনদ, গ্রাম আদালতের বিচার, ডিজিটাল সেবাসহ বিভিন্ন সেবা পেতে আসেন ইউনিয়ন পরিষদে। চেয়ারম্যান-মেম্বারের দ্বন্দ্বে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের লাখো মানুষ। কার্যত স্থবির হয়ে পরেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ৬নং বরমী ইউনিয়ন পরিষদ।
অর্ধ কোটি টাকা অনিয়মের কারণে সাময়ীক বরখাস্ত হন চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন। হাইকোর্টে রিট আবেদন করে ধরে রেখেছেন চেয়ার। এক জোট হয়ে নয় সদস্য দিয়েছেন অনাস্থা। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতার রশি টানা টানিতে উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। সচেতন মহল এলাকাবাসীর স্বার্থে দ্রুতই ইউনিয়ন পরিষদের অচলাবস্থার অবশান চান।
জানাযায়, সাড়ে ৪শ বছরের প্রাচীন জনপদ বরমী বাজার। বাজারের নামেই ইউনিয়নের নাম। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারগণের দ্বন্দ্বে মুখ থুবরে পড়েছে পরিষদের কার্যক্রমের।
সূত্র মতে, ২০২২ সালের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। বছর না ঘুরতেই নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের এক ভাগ আয়ের টাকার প্রকল্পের অনিয়মের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার হয়। চেয়ার ম্যানের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে পরিষদেও সদস্যরা অভিযোগ করেন। এর পর থেকে চেয়ারম্যান-মেম্বারগণের দূরত্ববেড়ে যায়। কার্যত মুখথুবরেও পরে ইউনিয়ন পরিষদ। উন্নয়ন ও সেবা থেকে বঞ্চিত লাখো মানুষ।
চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ২০২৩ সালের ২৬ জুন চেয়াম্যানকে সাময়ীক বরখাস্ত করে। বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন চেয়ারম্যান। এতে আটকে যায় তার সাময়ীক বরখাস্তের আদেশ।
২০২৪ সালের ১০ মার্চ ফের নয়জন মেম্বার-চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে অনাস্থার আবেদন করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
১০ জুন সোমবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তকালে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান মো. কোফাজ্জল হোসেনসহ আট মেম্বার ও তিন সংরক্ষিত নারী সদস্য। উপস্থিত এগারো সদস্যের মধ্যে নয়জন অনাস্থার পক্ষে ভোট দেন।
প্যানেল চেয়ারম্যান মো. রতন মিয়া জানান, নয়জন সদস্য অনাস্থা দেয়ার পর চেয়ারম্যানের বৈধতা থাকে না। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হলে চেয়ারম্যান চূড়ান্ত বরখাস্ত হবেন।
পরিষদের মেম্বারগণের মধ্যে মারুফ শেখ মোক্তার, মো. হাদিউল ইসলাম, নাজমুল আকন্দ রনি ও সুমন আহাম্মদ জানান, চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন দুর্নীতি অনিয়ম করে পরিষদকে অকার্যকর করে রেখেছে। ফলত সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার লাখো মানুষ। অবিলম্বে চেয়ারম্যানকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করে ইউনিয়ন পরিষদেও কাজের গতি ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মোবাইলে ফোন করলে চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আতিকুর রহমান জানান, চেয়ারম্যানের অনাস্থার বিষয়ে তিনি তদন্ত করেছেন। দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available