শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বিক্রি হওয়া নবজাতক শিশুকে উদ্বার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শাহরাস্তি থানা পুলিশ। মাত্র ৪ দিন বয়সী শিশুকে বিক্রি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।
১১ জুন মঙ্গলবার দুপুরে শাহরাস্তি থানা পুলিশের প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান সাঈদ জিকু।
তিনি জানান, ১০ জুন দুপুরে ৯৯৯ থেকে শাহরাস্তি থানা এলাকা থেকে একটি শিশু বিক্রয় হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমরা পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলি। তার নির্দেশে পুলিশ তৎক্ষণাৎ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অভিযানে নেমে পড়ে রাতেই চাঁদপুর শহর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে তিনি জানান, ওই ঘটনায় কোনো অপরাধ সংঘটিত না হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনায় শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
শাহরাস্তি থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে পুলিশ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার দক্ষিণ দেবকরা গ্রামের রাজমেস্ত্রি আবু নাছিরের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস শাহরাস্তি উপজেলা সদরে অবস্থিত পপুলার হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। ১০ জুন সকালে মেহার উ. ইউনিয়নের খনেশ্বর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা বেগম তার মেয়ের জন্য শিশুটিকে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে তাদের মধ্যে একটি চুক্তি নামা তৈরি করা হয়। ৯৯৯ এর মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে থানায় নিয়ে আসে।
রাতেই পুলিশ চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদি ব্যাংক কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেহেনা বেগমের মেয়ে হালিমা সিদ্দিকার বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
শিশুটির মা জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, তার স্বামী একজন রাজমিস্ত্রি। তার ঘরে দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রামে তৃতীয় সন্তান কন্যা হবে যেনে নিঃসন্তান দম্পতি হালিমা সিদ্দিকার কছে শিশুটিকে বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে জান্নাতুল ফেরদাউস দাবি করেন শুধু মাত্র সিজারিয়ান অপারেশন ও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয়ের বিনিময়ে শিশুটি দেয়া হয়।
বিক্রি করা শিশুটি ফিরে পেয়ে মা জান্নাতুল ফেরদাউস তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমি আর এ ভুল করবো না। এ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্তান হারানোর কষ্ট আমি বুঝতে পেরেছি। বর্তমানে আবু নাসির ও জান্নাতুল ফেরদাউস চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের খেড়িহর গ্রামের হুনার বাড়িতে বসবাস করছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available