স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুরের শ্রীপুরে গরু চুরি করার সময় চোরকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে গ্রামবাসী। পরে ১৫১ ধারায় (সন্দেহজনক) হিসেবে চোরকে গাজীপুর আদালতে পাঠিয়েছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। এসময় ওই চোরের সাথে জব্দ করা মোরটরসাইকেলও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
১৫ জুন শনিবার ভোর সোয়া ৪টায় উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ-আল মাসুমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রামবাসীর হাতে আটক চোর হামিদুল ইসলাম (২৫) হায়াতখারচালা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
চুরির প্রস্তুতির সময় হামিদুলকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেও থানা থেকে সন্দেহজনক হিসেবে আদালতে পাঠানোয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, গত ১৫ দিন যাবত শ্রীপুরের বিভিন্ন জায়গায় কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি হচ্ছে। এসব কারণে কৃষকেরা সারারাত গোয়াল ঘর পাহারা দিয়ে ভোর রাতে ঘুমাতে যায়। ওই সময় চোরেরা সুযোগমতো গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরির করে নিয়ে যায়।
কৃষক আব্দুল্লাহ-আল মাসুম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে পাহারা দিয়ে আড়াইটার দিকে ঘুমাতে যান। রাত ৩ টার দিকে গোয়াল ঘরে শব্দ পেয়ে ঘুম ভাঙ্গলে তিনি ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরের দিকে আসেন। এসময় চোরেরা টের পেয়ে পিকআপ নিয়ে তিন চোর পালিয়ে যায়। কৃষক মাসুমের চিৎকারে গ্রামবাসী ধাওয়া দিয়ে দুই চোর হামিদুল এবং তার সহযোগী মনির হোসেনকে (৩০) আটক করে। মনির পাশের কাপাসিয়া উপজেলার খোদাদিয়া গ্রামের মিলনের ছেলে। পরে প্রাকৃতিক ডাকে সারা দেওয়ার কথা বলে দৌড় দিয়ে স্থানীয় অকুর বিলে পড়ে যায়। পরে ধাওয়া দিলে বিল পার হয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশরাফুল ইসলাম বলেন, এটা নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আমরা বিষয়টা সমাধান করে ফেলেছি। বিষয়টি আরো জানতে চাইলে তিনি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে গ্রামবাসী হাতেনাতে চোরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার পরও ১৫১ ধারায় (সন্দেহজনক) হিসেবে গাজীপুর আদালতে চালান দিতে পারেন কি’না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সন্দেহজনক হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, গ্রামবাসী হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও কোনো বাদী না থাকায় ওই আসামীকে পুলিশ সন্দেহজনক (১৫১ ধারায়) হিসেবে আদালতে চালান দিতে পারে। তাছাড়া একজন ওসি যদি যাচাই-বাছাই করে দেখে ওই ঘটনার সাথে ব্যাক্তি জড়িত না তাহলে সন্দেহজনক হিসেব চালান দিতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ দিন যাবত শ্রীপুরে কৃষকের গরু চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রীপুরে কৃষকদের মাঝে গরু চোর আতঙ্ক বেড়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকার কৃষক রাত জেগে তাদের গোয়াল ঘর পাহাড়া দিয়ে ভোর রাতে ঘুমাতে যায়। এর ফাঁকে চোরেরা কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরির চেষ্টা করে। গত শুক্রবার রাতেও ওই গ্রামের কৃষক আফতাব উদ্দিনের বাড়ীতে চোরেরা রাত ৩ টায় হানা দেয়। গ্রামবাসী তাদের ধাওয়া দিলে পাশেই পুলিশ পাহাররত থাকায় খবর পেয়ে পুলিশও গ্রামবাসীর সাথে চোরদের ধাওয়া দিলে তারা পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যা বলে জানান গ্রামবাসী।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available