রংপুর ব্যুরো: জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নেই। সিংহভাগ মানুষ অর্থনৈতিক কারণে পশু কোরবানি দিতে পারেনি। ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। আনন্দ করতে পারছেন না। যাদের স্বচ্ছলতা আছে, তাদের উচিত এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো।
১৭ জুন সোমবার সকালে রংপুর জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ জামাতে আদায় শেষে সাংবাদিকদের সাথে কুশল বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, আমরা সবাই মিলে যদি উৎসব পালন করতে পারি, সেটিই হবে সত্যিকারের উৎসব। এককভাবে আমরা কোন উৎসব আনন্দ করতে পারি না। আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে, সামাজিকভাবে এবং দেশের সকল মানুষ যেন সমানভাবে উৎসব উদযাপন করতে পারি; তার জন্য সকলেরই দায়িত্ব আছে।
দেশ যেন সুন্দরভাবে চলে এই প্রত্যাশায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশটি যেন সুন্দর ভালো চলে। সামনের দিকে যেসব অসহায় গরীব মানুষ আছে, তারা যেন স্বচ্ছলতা ফিরে পায়। আবার যেন আমরা সবাইকে দেশকে সম্মিলিত এগিয়ে নিতে পারি, সেটি প্রত্যাশা করছি। আমরা একটি সুন্দরম সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। যেখানে ন্যায্যতা-সমতা, সুবিচার থাকবে, কোনো বৈষম্য, অন্যায়-অবিচার থাকবে না। আমরা যেন এ ধরণের বাংলাদেশ উপহার পাই, আল্লাহর কাছে এটিই আমাদের প্রার্থনা।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা। এ জন্য সরকারের একক ইচ্ছাকে দায়ী করছেন তিনি। জিএম কাদের বলেন, বর্তমানে যেভাবে দেশ চলছে তাতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। আমরা খুবই হতাশ হয়েছি এই বাজেটে। বিভিন্নভাবে যেসব সরকারি কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তাতে সত্যিকার অর্থে জনগণের সমস্যা নিয়ে সরকার যে বিচলিত, এটা মনে হচ্ছে না। তারা সরকার চালিয়ে যেতে চাচ্ছে নিজেদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরে। আমরা মনে করি এর থেকে উদ্ধার পাওয়া উচিত এবং সরকারেরও এখানে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া উচিত। অথবা জনগণকে এগিয়ে এসে সরকারকে এটা করতে বাধ্য করতে হবে। এটি হলে বাস্তব সত্য।
সেন্টমার্টিন প্রসঙ্গে শঙ্কা প্রকাশ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সেন্টমার্টিনের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান নিয়ে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। ওনারা (সরকার) কি করতে চাচ্ছেন, আমরা বুঝতে পারছি না। মিয়ানমার বাহিনী কতটুকু অগ্রসর হলে আমরা মনে করব তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করছে, এটা আমাদের কাছে পরিস্কার নয়। আমাদের লোকজন সেখানে (সেন্টমার্টিন) যেতে পারছে না, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেও পারছে না। তাদেরকে সবসময় একটা ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এরকম অবস্থায় আমরা যদি এখনো মনে করি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঠিকভাবে একটা সিদ্ধান্তে আসব, সেটা হতে পারে। কিন্তু আমাদের উচিত আমাদের শক্তি নিয়ে দাঁড়ানো। তাদেরকে (মিয়ানমার) সেটি বুঝিয়ে দেয়া অন্যকিছু করে তারা পার পাবে না। আমার সহজেই তাদের ছাড় দিবো না, আমাদের দেশকে আমরা রক্ষা করব এবং তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করব।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পরে জিএম কাদের রংপুর মহানগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে গিয়ে তার মা-বাবার এবং দর্শনা পল্লীনিবাসে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন। এসময় তার সঙ্গে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available