মাসুদ রানা, বাসাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: পল্লী কবি জসীম উদদীনের সেই বিখ্যাত উক্তি ‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,রহিমুদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি’।
কবির সেই আসমানীরা এখন নিজের ঠিকানা পেয়ে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্ধাদের জীবন-মানের পরিবর্তন শুরু হয়েছে টাঙ্গাইলের বাসাইলে।
সরেজমিনে বাসাইল উপজেলার কাউলজানি, বাসাইল পূর্বপাড়া, আশ্রয়ণ প্রকল্পে দেখা গেছে সময়ের সাথে এখন বদলেছে ছিন্নমূল মানুষের জীবন। কবির ওই ভেন্না পাতার ছাউনি থেকে তারা এখন বসবাস করছে রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতেই করছেন শাক-সবজির আবাদ। কেউবা করছে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন। সন্তানদের পাঠাচ্ছে স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। বসবাসের জন্য সরকারের দেওয়া এই সুবিধাটি পেয়ে খুশি আশ্রয়হীন মানুষগুলো।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা গঠন করেছে সমবায় সমিতি। তারা নিয়মিত নিচ্ছে প্রশিক্ষণ, অনেকের একাডেমিক শিক্ষা না থাকলেও নানা প্রশিক্ষণে হয়ে উঠছেন স্বশিক্ষিত। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকিতে ক্রমেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের নানা দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।
প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া মোনজু রাণী শীল, মুক্তি রাণী দাস, মরিয়ম বেগম, শালেহা, ইব্রাহিম মিয়া, বকুলসহ আরও অনেকেই জানান, ‘কিছু দিন আগেও ভাবিনি নিজের ভালো একটা ঠিকানা হবে। এখন সেটি হয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছি। নিজেরা হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সত্যিই এটা স্বপ্নের। এমনটি হবে ভাবিনি, সৃষ্টিকর্তার কাছে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উপজেলার হতদরিদ্র, যাদের বসবাসের কোনও ঠিকানা ছিল না, তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এটা সত্যিই বিস্ময়কর। ওই মানুষগুলো তাদের ভাগ্যের চাকা নতুনভাবে ঘুরাতে শুরু করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া আক্তার বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে। আমরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করেছি। এই প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোল মডেল। কারণ এভাবে কোনও দেশে আশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ ছাদ তৈরি করে দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, উপজেলায় মোট ৬৮ পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়া হয়েছে। এবং ৪২ টি ঘরের কাজ চলমান আছে। এই প্রকল্পের বাসিন্দাদের স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ এবং ঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন ,স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যোগ্যদের চিহ্নিত করে ঘর দেওয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available