• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:১৩:০০ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:১৩:০০ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

আঁখ ও বেলের জন্য বিখ্যাত সোমেশ্বরী মেলা

২০ মার্চ ২০২৩ বিকাল ০৪:৩৯:১৩

আঁখ ও বেলের জন্য বিখ্যাত সোমেশ্বরী মেলা

বিপ্লব রায়, শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভাটি বাংলার নিদর্শন সোমেশ্বরী মন্দির। বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে আরাধনা করা হয় এই দেবীর। তবে উনার প্রতীকি কোনো মূর্তি না থাকলেও চল্লিশেক পাথরখন্ড হচ্ছে এই দেবীর বিগ্রহ। প্রায় তিন’শ বছর ধরে শাল্লা উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা পাথরখণ্ডে দুধ ঢেলে স্নান করিয়ে সিঁদুর মাখিয়ে পুজো করে আসছেন।

আর এখানে দাঁড়িয়ে কায়মনোবাক্যে মনের দুঃখ জানাচ্ছেন লৌকিক দেবী সোমেশ্বরীর কাছে। বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে দেবীর ভক্তদের উদ্যোগে প্রতিবছর চৈত্র মাসের প্রথম ২০ মার্চ সোমবার অনুষ্ঠিত হয় সোমেশ্বরী মেলা।

এই মেলাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো ভক্তদের আগমন ঘটে। দুদিন ধরে এই মেলার সকল কার্যক্রম চলে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও চৈত্র মাসের রবি ও সোমবার মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এ দুইদিন এখানে মেলা বসে।

দুই দিনব্যাপী মেলার প্রথম দিন বসে ‘বেল- আঁখের মেলা’। এই মেলায় কেবল বেল ও আঁখ বিক্রি হয়। শত শত পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা বেল ও আঁখ নিয়ে বসে থাকেন। প্রতি আঁটি (এক আঁটিতে অন্তত ৮-১০টি থাকে) আঁখ বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় এবং প্রতি হালি বেল বিক্রি হয় ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। পরের দিন সোমবার সোমেশ্বরী প্রাঙ্গণে বসে বারোয়ারি মেলা। খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে ব্যবহার্য জিনিস—হরেক রকমের জিনিস মেলে সেই মেলায়। উপমহাদেশের অন্যতম এই বৃহৎ মেলায় ভাটি অঞ্চলের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে।

শুধু তাই নয়, এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে-মহিষ বলিদান পূর্ব পর্যন্ত ওই পাঁচগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতেও চুলোয় আগুন জ্বালানো হয় না। রেওয়াজ অনুযায়ী-বলিদান শেষে রান্না-বান্নার যাবতীয় সরঞ্জাম ধূয়ে মুছে তারপর শুরু হয় রান্নার কাজ।

লৌকিক দেবি সোমেশ্বরী পূজায় অলৌকিক কান্ডেরও নানা তথ্য জানাগেছে লোকমুখে। নিয়ম অনুযায়ী বলি না হলে মন্দির প্রাঙ্গণে নানা ভুতুড়ে কান্ড ঘটতে থাকে। তাছাড়া স্থানীয়দের বিশ্বাস সোমেশ্বরী দেবীর সন্তষ্টি আদায় করতে পারলে অকাল বন্যার কবল থেকে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা করা খুবই সহজ হবে। ফলে কৃষি নির্ভর শাল্লা অঞ্চলের মানুষ গভীর শ্রদ্ধায় মহা আড়ম্বরে সোমেশ্বরী দেবীর পূজার্চ্চনা করে আসছেন।

সোমেশ্বরী দেবীর ভক্ত ও সোমেশ্বরী সংগঠনের সদস্য বাহাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (৭৫) জানান, ছোটবেলায় তিনি দেখেছেন তার দাদু-দিদা, মা-বাবাসহ স্বজনরা সোমেশ্বরী দেবীকে এসে পুজা দিতেন। তিনিও তাদের পথ ধরে প্রতি বছর পূজা দেন। এ উপলক্ষে দেবীর মন্দির ঘিরে মেলাও বসে। তিনি জানান, এই মেলা ও পুজার বয়স আনুমানিক তিনশত বছর হবে।

সোমেশ্বরী মেলা বিষয়ে গ্রামের মুরুব্বি কালী রায় জানান, পূর্বসূরীদের ঐতিহ্য হিসেবে প্রতি বছর চৈত্র মাসে দেবী সোমেম্বরী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় ধর্মীয় ভাবগম্বীর্য ও পবিত্রতা রক্ষায় পরিচালনা কমিটি সুশৃঙ্খলভাবে দায়িত্ব পালন করে। তিনি আরো বলেন, সোমেশ্বরী দেবী এই অঞ্চলের মানুষের ফসল ও জীবন জীবীকা রক্ষার অবলম্বন- এমন বিশ্বাস বোধ থেকে গভীর শ্রদ্ধায় ও ভক্তি সহকারে দেবির পূজার্চ্চনা সম্পন্ন হয়।

সোমেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার এ বিষয়ে বলেন, মন্দির পরিচালনা কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে প্রতিবছর দুইদিন ব্যাপী মেলা ও পূজানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

তিনি আরও বলেন, মেলায় বেল ও আঁখের ক্রেতা হিসেবে সনাতন ধর্মের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের অংশগ্রহণ মেলার আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক। এর ফলে সোমেশ্বরী মেলায় কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয় নি

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৪:২০:৫২





আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হাওরের চাষিরা
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৩:৩৬:৫৫