রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চাকরির প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের অধীন ৪৭ জন ‘পেইড পিয়ার ভলান্টিয়ার’ (পিপিভি) ৭ দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন। ২৪ জুন সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে এই কর্মবিরতি পালন করেন। ৩০ জুন পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবার পাশাপাশি ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও পিপিভিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের অধীন ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রোগ্রামের অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ‘পিপিভি’ নামে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ৩ হাজার ৬ শত ৮৬ জন নিয়োগ পান। ২০২১ সালের জুন মাসে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৪৯ জন নারী নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরে অন্য পদে চাকরি হওয়ায় দুইজন এই পদ থেকে অব্যাহতি নেন। প্রকল্প কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে একসাথে রাঙ্গুনিয়াসহ সারাদেশের ৩ হাজার ৬ শত ৮৬ জন নারী কর্মী বেকার হয়ে পড়বে।
২৩ জুন রোববার অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সারাদেশের মতো রাঙ্গুনিয়ার ৪৭ জন নারী কর্মী।
কর্মবিরতি পালনকালে পদুয়া ইউনিয়নের পিপিভি জয়া বড়ুয়া বলেন, এই চাকরিতে অনেকের পরিবার চলছে। চাকরি হওয়ার পর অনেকের স্বামী মারা গেছে। স্ত্রীর আয়ের চলছে সংসার। অনেকেই স্বামী পরিত্যক্তা, পিপিভি’র আয়ে চলে পরিবার। চাকরি চলে গেলে পরিবার কীভাবে চলবে। সবার মুখে কীভাবে খাবার যোগাবো সেই চিন্তায় অনেকেই।
পোমরা ইউনিয়নের পিপিভি ফাতেমা জান্নাত ডলি বলেন, সরকারি চাকরির বয়স মেনে এখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া দুইয়ের অধীক সন্তান নেয়া চাকরির অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ দেয়া হয়। এতদিন চাকরি করার পর হঠাৎ প্রকল্প বন্ধ হওয়ার খবরে সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে।
মাত্র এক সপ্তাহ আগে প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ঘোষণা খুবই দুঃখজনক। সময় দিয়ে চাকরি থেকে সরানো উচিত ছিল। চাকরি হারিয়ে অনেকেই পরিবার নিয়ে কষ্টে পড়বেন। চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্য কোথাও চাকরি পাওয়া যাবে না। মানবিক কারণে হলেও প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা, নইলে অন্য প্রকল্পে বাতিল হওয়া পিপিভিদের সংযুক্ত করলে পিপিভিরা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখবে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার (এম সি এইচ-এফ পি) কাজী লামিয়া শারমিন বলেন, এ মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে প্রকল্পের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সমাপ্ত করতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অধিদফতর থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। সকল কর্মীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
কর্মবিরতি পালনের কারণে কার্যক্রমের একটু অসুবিধা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে কর্মীদের রাখার কোনো সুযোগ আমাদের নেই।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available