মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ২৮ জুন ২০১১ সালে পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনার সময় মানিকগঞ্জে সাক্ষরতার হার ছিল ৪৯.২০ শতাংশ। এক দশকে তা প্রায় ২১ শতাংশ বেড়ে ৭১.১৭ শতাংশ হয়েছে। পুরুষের তুলনায় নারীদের সাক্ষরতার হার বেড়েছে।
তবে সাধারণ পড়াশোনার হার সাড়ে ৯৬.৮০ শতাংশ থেকে কমে ৯১.৬৪ শতাংশে ঠেকেছে। বিপরীতে ধর্মীয় পড়াশোনা ২.৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ৪.৬২ শতাংশ হয়েছে। প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুযায়ী মানিকগঞ্জে বর্তমানে ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৫ মানুষের বসবাস।
২৭ জুন বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জনশুমারির জেলা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ পরিচালক মিনার উদ্দিন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
প্রাপ্ত ফলাফলে জানা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ ও নারী ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন। হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ আছেন ১২৬২৯ জন।
মানিকগঞ্জ জেলার মোট জনসংখ্যা ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২৫ জন। এর মধ্যে পল্লিতে ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৩৮৭ জন, শহরে ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৩৮ জন, বস্তিতে ১৭০ জন এবং ২৩৫ জন ভাসমান লোক বসবাস করেন।
জেলার সদর উপজেলার জনসংখ্যা সর্বাধিক ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৮২৯ জন এবং হরিরামপুর উপজেলার জনসংখ্যা সর্বোনিম্ন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬৯ জন। অন্যান্য উপজেলার জনসংখ্যা- দৌলতপুরে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪২৫ জন, ঘিওরে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০৯ জন, সাটুরিয়ায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬ জন, শিবালয়ে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬২ জন এবং সিংগাইরে ৩ লাখ ২৮ হাজার ১২৫ জন।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মানিকগঞ্জ জেলায় নারী ৮ লাখ ৬ হাজার ১৮ জন, পুরুষ ৭ লাখ ৫১ হাজার ৯১২ জন, হিজড়া ৯৮ জন, প্রতি ১০০ জনে ৫১.৭৪ জন নারী এবং ৪৮.২৬ পুরুষ জনবসতি রয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এই হার ছিল ০.৮০ শতাংশ। ২০২২ সালের শুমারিতে যা বৃদ্ধি পেয়ে ১.০০ শতাংশে এসে পৌঁছিয়েছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সাথে বেড়েছে জনসংখ্যার ঘনত্বও। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী মানিকগঞ্জ জেলার জনবসতি প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১১২৬ জন যা ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুয়াযী ছিল ১০০৭ জন।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুযায়ী, মানিকগঞ্জ জেলার মোট জনসংখ্যার ৯১.০৪ শতাংশ মুসলিম, ৮.৯১ শতাংশ হিন্দু, ০.০৩ শতাংশ খ্রিস্টান, ০.০১ শতাংশ বৌদ্ধ, ০.০১ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর রয়েছে ৯০৯ জন।
প্রতিবেদন বলছে, মানিকগঞ্জ জেলায় অবিবাহিত জনসংখ্যার ১৮.৭৫ শতাংশ নারী, ৩২.৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং বিবাহিত জনসংখ্যার ৬৮.৮১ শতাংশ নারী, ৬৫.৫৬ শতাংশ পুরুষ । অবিবাহিত হিসেব করা হয়েছে ১০ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার মানুষকে ধার্য করে। শুমারির ফলাফল অনুযায়ী, মানিকগঞ্জে নারী সাক্ষরতার হার ৬৮.২২ এবং পুরুষ সাক্ষরতা হার ৭৪.৩৭ শতাংশ।
প্রাপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোট ৬৯.৩৩ শতাংশ মানুষের নিজ ব্যবহারের মোবাইল ফোন রয়েছে এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোট ৩৮ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
জনশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপমহাপরিচালক (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী, পরিসংখ্যান অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং অন্যান্য সরকারী অফিসের কর্মকর্তাগণ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available