ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরে মৃত্যুর ৫ দিন পর বাড়ি ফিরলেন তরুণী। ১০ মাস পর কবর থেকে তোলা হল মরদেহ। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবি গ্রামে।
জানা যায়, গতবছর ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে সদরপুর আসার উদ্দেশ্যে বের হয়। সেই থেকে হাসি বেগমকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় হাসির পিতা সেক হাবিবুর রহমান সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে, তার কন্যা হাসি বেগমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে জামাতা মোতালেব শেখ। পরবর্তীতে হাসির স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পালটা অভিযোগ করে, তার স্ত্রী নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছে।
ঘটনাচক্রে গতবার ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা কুমের কচুরিপানার ভেতর থেকে সনাক্তের অযোগ্য একটি অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরবর্তীতে সেই মরদেহ হাসি বেগমের বলে দাবি করে তার পরিবার। নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহের কোমরে একটি তাবিজ ও পায়ের একটি নখ ছোট থাকায় নিখোঁজ হাসি বেগমের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
এ ঘটনা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ার পর ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগম মোবাইল ফোন তার পরিবারকে বলে সে জীবিত আছে এবং ৫ দিন পর বাড়ি ফিরে আসে। এলাকাবাসীর ধারণা হাসি বেগম পরক্রিয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। হাসি বেগম ফিরে আসার পর জনমনে এক প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে তাহলে কবর দেওয়া ওই মরদেহটি কার?
বর্তমানে ভাঙ্গা থানার মানিকদাহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের ইয়াদ আলী দাবি করেন মরদেহটি তার মেয়ের। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট ও সদরপুর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে রবিবার দুপুরে দীর্ঘ ১০ মাস পর কবর থেকে মরদেহটি তোলা হয় এবং ডিএনএ টেস্টের জন্য মরদেহটির বিভিন্ন অংশের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুজ্জামান রিশাদ বলেন, আমরা কবর থেকে আজ মরদেহ উত্তোলন করেছি এবং সেখান থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করেছি। ফরেনসিক বিভাগের তথ্য পাওয়ার পর জানা যাবে আসলেই এই বেওয়ারিস মরদেহটি ইয়াদ আলির মেয়ের মরদেহ কিনা।
মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপ্ত চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ সাহেন শাহ, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. মো. ইউনূস আলী, মানিকদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ অনেকে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available