জহিরুল ইসলাম খান লিটন, স্টাফ রিপোর্টার (সাভার): ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে খেলার মাঠের জন্য আবেদন করে এক ব্যক্তির জমি দখলের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জামিনে ফিরে এসে বাদী ও তার স্বজনদের পরিবারের সদস্যদের মারধর, বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত ৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২৪ মার্চ শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ফজল হক মাস্টারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে মো.সোলাইমান। এর আগে ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ধামরাই উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ফজলুল হক (৬৮), হাবিবুর রহমান (৫৮), রোজিনা (৩৫), সাজেদা বেগমকে (৫৫) মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও আবুল কাসেম (৫৫), মমতাজ বেগম (৪৫), সুমন আহমেদ (৩৫), আসমা বেগমকে (৪৫) সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড়নালাই গ্রামের বাসিন্দা।
থানার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাঠ করার নামে এলাকার কিছু লোকজনকে নিয়ে ভুক্তভোগীর একটি জমি দখলের চেষ্টা করছেন একই গ্রামের বাসিন্দা ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সাটুরিয়া উপজেলার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান। তবে সেখানে মাঠের অনুমোদন দেয়নি প্রশাসন। এনিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই জমির গাছ কেটে পতাকা পুতে দখল করা হয় জমিটি।
এ ঘটনায় ২০ মার্চ আদালতে ও থানায় ৩৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। সেদিন রাতেও ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। ওই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে বৃহস্পতিবার আদালত থেকে গ্রেফতার দুই আসামিসহ অন্য আসামিরা জামিন পায়। ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই তারা বাদী ও তার স্বজনদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে মারধর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
ফজল হক মাস্টারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, রাতে ১০টার দিকে তারা খেয়েদেয়ে শোবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরমধ্যেই চিৎকার চেচামেচির শব্দ শুনতে পান। তাদের ঘরে ঢুকে তার বৃদ্ধ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবা-মা ও তাকে মারধর করে ওই আসামিরা। প্রায় ১০-১৫ মিনিট ধরে মারধরের পর আসামিরা চলে যায়। পরে তারা জানতে পারেন একইভাবে তাদের স্বজনদের আরও আটটি বাড়িতে হামলা হয়েছে। হামলা চালিয়ে ঘরের বেড়া ও দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মারধর ও ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণ লুট করা হয়। এছাড়াও ওই জমির পাশে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের বাড়ির গোয়াল ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও এ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি। কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর করা হয়েছে। একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল, তবে ওই বাড়ির লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে আরেকটি মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরাও তদন্ত করছি।
এব্যাপারে ধামরাইয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার বলেন, মাঠের আবেদন করা হলেও এখনো মাঠ হিসেবে সেটি বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available