রাজশাহী প্রতিনিধি: সংগ্রামী ও সফল নারীদের প্রতীকি নাম জয়িতা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল ও সংগ্রামী নারীদের আত্মশক্তিতে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কর্মসূচির আওতায় রাজশাহী বিভাগের পাঁচ সংগ্রামী নারীকে সংবর্ধিত করা হয়।
এ উপলক্ষে ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতাগণের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচারক কেয়া খান।
শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের অভিনন্দন জানিয়ে কেয়া খান বলেন, ২০১৩-১৪ সনে জয়িতা অন্বেষণ শুরু হয়। জয়িতা অন্বেষণের মূল লক্ষ্য নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ধর্মসহ সমাজের সর্বক্ষেত্রেই নারীদের সম্মানের আসনে আসীন করা হয়েছে। আজকের জয়িতাদের দেখে অন্যান্য নারীরাও আগামীতে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ভালো কাজ করার চেষ্টা করবেন, এটাই প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, জয়িতা নামটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া। তাঁর উদ্যোগে নারীরা আজ সর্বক্ষেত্রেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নারীরা দক্ষতার সাথে কাজ করছে। সরকারি চাকরির বিভিন্ন পর্যায়ে বর্তমানে প্রায় ২৯ শতাংশ নারী কর্মরত রয়েছেন। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ নারী কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সল মাহমুদ, আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও নারীনেত্রী শাহীন আকতার রেণী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শবনম শিরিন, অন্যতম শ্রেষ্ঠ জয়িতা নগরীর তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সদস্য মো. মুহিন (মোহনা)।
অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী, সফল জননী নারী, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী ও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা নারী, এই পাঁচ ক্যাটাগরিতে এ বছর রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলা থেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত মোট ৪০ জনের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত ফলাফলে পাঁচজনকে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এবারের শ্রেষ্ঠ জয়িতারা হলেন, অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী ক্যাটাগরিতে জয়পুরহাট সদর উপজেলার হাছনা বেগম, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ডা. শিউলী আক্তার, সফল জননী হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গোলসানারা বেগম, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করা নারী হিসেবে রাজশাহী নগরের মর্জিনা এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য জয়িতা সম্মাননা পেয়েছেন রাজশাহী নগরীর বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সদস্য মো. মুহিন (মোহনা)।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা স্মারক, উত্তরীয় ও সনদপত্রসহ ২৫ হাজার করে টাকা এবং জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত অপর ৩৫ জয়িতার প্রত্যেককে সম্মাননা স্মারক, সনদসহ ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভাগীয় পর্যায়ে নির্বাচিত ১০ জয়িতার জীবন সংগ্রামের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available