পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগাছা উপজেলা সদরের সুখানপুকুর হাজী হাফেজুল্যাহ জামে মসজিদে বিতর্কিত ঈমাম দ্বারা নামাজ আদায় করাকে কেন্দ্র করে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই ঈমামের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও সাধারণ মুসল্লিরা দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় যেকোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা যায়, উপজেলার জগজীবন গ্রামের বাসিন্দা এবং মমিন বাজার আল-হেলাল ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. ইসরাফিল হোসেন হেলালী ছয় মাস ধরে সুখানপুকুর হাজী হাফেজুল্যাহ জামে মসজিদে প্রধান ঈমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দুই মাস আগে তিনি তার মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে নিজ অফিস কক্ষে যৌন হয়রানি করাকালে স্থানীয় জনতা তাকে হাতেনাতে আটক করে উত্তম-মধ্যম দেয়।
পরে সংবাদ পেয়ে পীরগাছা থানা পুলিশ উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ঈমাম ইসরাফিল হোসেন হেলালীসহ যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু করে তাকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়। ওই মামলায় প্রায় দুই মাস হাজতবাসের পর সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ঈমাম ইসরাফিল হোসেন হেলালী গত ১৯ জুলাই শুক্রবার সুখানপুকুর হাজী হাফেজুল্যাহ জামে মসজিদে জুম্মার নামাজে ঈমামের দায়িত্ব পালনের জন্য আসেন।
এ সময় মসজিদে থাকা মুসল্লিরা তাকে বাধা দেন। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মাজেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মুসল্লিদের মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে সাবেক ঈমাম মাও. গোলজার হোসেনের ইমামতিতে জুম্মার নামাজ সম্পন্ন হয়।
এই ঘটনার পর সাধারণ মুসল্লিরা বিতর্কিত ঈমাম ইসরাফিল হোসেন হেলালীকে বহিষ্কার করে নতুন ঈমাম নিয়োগের জন্য দাবি জানালেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এতে অপারগতা প্রকাশ করে বিতর্কিত ওই ঈমাম দ্বারা নিয়মিত নামাজ আদায়ের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। গত এক সপ্তাহ ধরে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাধারণ মুসল্লীদের মধ্যে সাজু মিয়াসহ আরও অনেকেই বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ হবার ৭ মাস অতিবাহিত হবার পরও সভাপতি আব্দুল মাজেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্যান্য সদস্যরা জোর করে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তারা সাধারণ মুসল্লিদের দাবি উপেক্ষা করে অজ্ঞাত কারণে বিতর্কিত ঈমামকে বহিষ্কার না করে তাকে দিয়ে নামাজ আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা বিষয়টি নিরসনে উপজেলা প্রশাসনসহ থানা পুলিশের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মাজেদ, কমিটির মেয়াদ শেষ হবার কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি ইতোমধ্যে নতুন কমিটি গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈমাম ইসরাফিল হোসেন হেলালীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিজ্ঞ আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়নি এবং তাকে ঈমাম পদে বহাল রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সুশান্ত কুমার সরকারের নিকট থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনলেন। উত্তেজনা প্রশমন ও সংঘর্ষ এড়াতে দ্রুত তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available