ফরিদপুর প্রতিনিধি: সম্প্রতি কোটা আন্দোলন কে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় ১৭ জনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সদরপুর থানার এসআই (নি.) তানভীর শেখ বাদী হয়ে গত ১৮ জুলাই সদরপুর থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। যার জিডি নং-৭৫৬ (১৭/০৭/২৪) এবং মামলা নং-১৫ (১৮/০৭/২৪)।
এজাহারে অভিযুক্তরা হলেন ১. তুষার মাহমুদ মুন্সি (২৮), পিতা নান্টু মুন্সী, সাং সতেররশি, ২. রুমন মাতুব্বর (২৬), পিতা আলমগীর মাতুব্বর, সাং সাড়ে সাতরশি, ৩. হেলাল (২০), পিতা হালিম, সাং সতেররশি, ৪. জনি (২৪), পিতা সোহরাব মোল্লা, সাং মটুকচর, ৫. মামুন তালুকদার (৩৫) পিতা কাশেম তালুকদার, সাং নয়রশি, ৬. নাসির (২৩), পিতা বিল্লাল তালুকদার, সাং আকোটেরচর, ৭. সাবিত বেপারী (২৪), পিতা হালিম বেপারী, সাং সতেররশি, ৮. কাওছার (২৫), পিতা সাইদ বেপারী, সাং চন্দ্রপাড়া, ৯. জামাল মৃধা (২২), পিতা ইউসুব মৃধা, সাং আমিরাবাদ, ১০. বক্কার বেপারী (২৪), পিতা রইচ বেপারী, সাং সতেররশি, ১১. মোতালেব পেয়াদা (৩৫), পিতা খালেক পেয়াদা, সাং চৌদ্দরশি, ১২. আসাদ মৃধা (৩২), পিতা মৃত রহমান মৃধা, সাং আমিরাবাদ, ১৩. বক্কার পেয়াদা (৪০), পিতা মৃত হাশেম পেয়াদা, সাং চৌদ্দরশি, ১৪. ইনান পেয়াদা (১৯), পিতা আকাবুল পেয়াদা, সাং সতেরশি, ১৫. মো. ইন্নি (১৯), পিতা শাহজাহান, সাং চন্দ্রপাড়া, ১৬. তুতান ফকির (২০), পিতা আল আমিন ফকির, সাং সতেররশি, ১৭. জুবায়ের আহম্মেদ (১৯), পিতা শেখ মিন্টু, সাং চরবিষ্ণুপুর (খেজুরতলা)সহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন।
এজাহারের বিবরণে বাদী এসআই (নি.) তানভীর শেখ উল্লেখ করেন, আমি সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ ১৭/০৭/২৪ তারিখ সকালে থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ডিউটি করাকালীন সকাল অনুমান ১১টা ২০ মিনিটে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলা থানাধীন সদরপুর সরকারি কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ ও অন্যান্য কলেজ পড়ুয়া সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা সদরপুর সরকারি কলেজ কম্পাউন্ডে বিক্ষোভ মিছিলের জন্য হাজির হয়।
পরে সদরপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ ও সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আন্দোলনকারীদের তাদের কলেজ কম্পাউন্ডের ভেতর বিক্ষোভ মিছিল সীমাবদ্ধ রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা তাদের কথা না শুনে জোর জবরদস্ত করে সদরপুর কলেজ গেট দিয়ে রাস্তায় চলে আসে। তারা মিছিল নিয়ে সদরপুর বাজারের মধ্য দিয়ে পুনরায় সদরপুর কলেজ মোড়ে এসে ৫ মিনিট অবস্থান করে।
পরবর্তীতে সদরপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এসে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়। মিছিলে নেতৃত্বদানকারী ১ নং বিবাদী তুষার মাহমুদ মুন্সী এবং ২ নং বিবাদী রুমন মাতুব্বর উসকানিমূলক সংক্ষিপ্ত ভাষণ প্রদান করেন।
এক পর্যায়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মোরাদ আলী ও সদরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে পরিবেশ শান্ত রাখার অনুরোধ করলে বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুমান সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে সমাবেশ শেষে চলে যাওয়ার পথে আন্দোলনকারীরা সদরপুর থানাধীন মমিনের মোড়ে এসে রাস্তা অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা করে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসিল্যান্ড (ভূমি) ও থানা অফিসার ইনচার্জ সদরপুর থানাধীন কলেজ কম্পাউন্ড থেকে রাস্তায় গেলে সদরপুর থানাধীন মমিনের মোড় পাকা রাস্তার উপর অবস্থানকারী উশৃংখল আন্দোলনকারীরা দুপুর অনুমান ১২টা ৫ মিনিটিরে সময় তাদেরকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে ইট-পাটকেল মারলে আমার সঙ্গীয় এসআই (নি.) মো. মামুনুর রশিদ, কং-৭৩৭, মো. বিল্লাল হোসেন, বিপি ৮৪০৫১০৫৭৬৫, উভয় কর্মস্থল-সদরপুর থানা, ফরিদপুরদ্বয় সাধারণ ও গুরুতর আহত হয়।
আসামীরা পুলিশের কর্তব্যকালে বাধা প্রদানসহ পুলিশের উপর আক্রমণ করে পুলিশকে আহত করায় পেনাল কোড আইনের ১৪৩/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/৩০৭/৩৪ ধারায় অপরাধ করেছে বিধায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজুপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
বর্তমানে সদরপুর থানায় এই মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে বেশ থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো উপজেলাজুড়ে। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা অনেকেই গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available