কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে কেরানীগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় রাস্তার শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দুইদিন বিশৃঙ্খল অবস্থায় চললেও ৭ আগস্ট বুধবার সকাল থেকে কেরানীগঞ্জের কদমতলী ও হাসনাবাদ এলাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ছাত্রছাত্রীরা কাজ শুরু করায় রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটায় কদমতলী গোল চত্বর এলাকায় দেখা যায় কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এবং কেরানীগঞ্জে বসবাসরত বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী একত্রিত হয়ে বেশ কয়েকজন সমন্বয়কের মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, রাস্তায় দেয়াল লিখন ও রাস্তার দুই পাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এ সময় কদমতলী গোল চত্বরে নুর ইসলাম কমান্ডারের ভাঙ্গা মূর্তির দেয়ালের মধ্যে দুইজন চাঁদাবাজকে খালি গায়ে বেধে রাখতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, তারা খেয়া ঘাটে মাঝি ও পারাপারের যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছিল। খবর পেয়ে মিছিল সহকারে ছাত্রদের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে ধরে নিয়ে এসে জনসম্মুখে বেঁধে রেখেছে।
তপ্ত দুপুরে শতাধিক শিক্ষার্থীকে মাথায় ছাতা নিয়ে হাতে গ্লাভস পড়ে রাস্তার দুই পাশের ময়লা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। রাস্তার ময়লা আবর্জনা পরিষ্কাররত শিক্ষার্থী শফিক জানান, নিজের দায়িত্ববোধ থেকে রাস্তা পরিষ্কারের কাজে নেমেছি। আমাদের দেশ আমাদের নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হবে। তবে মানসিকতা পরিবর্তন না হলে এই পরিষ্কার আমরা ধরে রাখতে পারব না। তাই সড়কের পরিষ্কারের সাথে সাথে নিজেদের মন মানসিকতাও পরিষ্কার করতে হবে।
এ সময় হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল যাত্রীদের রাস্তায় থামিয়ে হেলমেটবিহীন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ও আইন পরিপন্থি এমন কাউন্সেলিং করতে দেখা যায়।
কদমতলী এলাকার ছাত্রদের সমন্বয়েকের দায়িত্বে থাকা ইস্পাহানি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আল-আমিন মিনহাজ জানান, ছাত্রদের যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন ছিল সরকার পতনের পর তা দেশ সংস্কারের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দের সাথে যোগাযোগ রেখে কেরানীগঞ্জ সংস্কারের কাজ করছি। গতকাল থেকে আমাদের এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল আমরা রাস্তা পরিষ্কার ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছি,আজ এই কর্মসূচির সাথে দেয়ালে ছাত্র আন্দোলনের নিহতদের স্মরণে চিত্রাঙ্কন যুক্ত হয়েছে। ছাত্রদের অর্থায়নে এই চিত্রাঙ্কন শুরু হয়েছে।পরে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে রং তুলি, রাস্তা পরিষ্কারের জন্য হ্যান্ড গ্লাভস,ঝাড়ু এবং পরিষ্কারের বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে রাজধানীর সায়দাবাদ ও গুলিস্তান এলাকা থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিণবঙ্গগামী গাড়িগুলো কেরানীগঞ্জের উপর দিয়ে ঢাকা মাওয়া মহাসড়কে সংযুক্ত হয়। তাই এই রাস্তায় শৃঙ্খলা খুবই জরুরি ছিল।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available