কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই ময়েনউদ্দিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫ আগস্টের পর পলাতক থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। তিনি বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর মাধ্যমে নিজের বাসায় হাজিরা খাতা নিয়ে গিয়ে আগাম সই করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ে সরজমিন গিয়ে জানা যায়, ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপের মুখে সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে কালাই ময়েনউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল পলাতক রয়েছেন। তাঁর অফিস কক্ষে তালা ঝুলানো অবস্থায় দেখা গেছে। এদিকে ৬ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল থেকে বিদ্যালয় খোলার ঘোষণা হলেও তিনি উপস্থিত না হয়ে আত্মগোপনে আছেন। তিনি ১৩ আগস্ট অফিস সহকারী মো. সুজাউল ইসলামকে মোবাইল ফোনে গোপনে হাজিরা খাতা নিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি মাত্রাই যেতে বলেন। অফিস সহকারী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ওইদিন বিকালে তাঁর গ্রামের বাড়িতে হাজিরা খাতা নিয়ে গেলে আগাম ১৪ তারিখ পর্যন্ত তিনি সই করেন। যা অফিস সহকারী মো. সুজাউল ইসলাম তাঁর ভিডিও বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভিডিও বক্তব্যে বলেন, আমরা স্যারকে ৬ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বিদ্যালয়ে দেখিনি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিদ্যুৎ কুমার ও সমীর কন্ডু বলেন, ‘আমরা তাঁকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত পেয়েছি। এমন বেআইনি কাজ শিক্ষার্থীদের জন্য ভয়ানক বার্তা দেয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এই আচরণ আমাদের বিদ্যালয়ের নৈতিকতা ও শিক্ষার মানকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।’
অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুলকে মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইফতেখার রহমান বলেন, ‘একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি অনুসরণ ও রক্ষার দায়িত্বে থাকার কথা, অথচ তিনি নিজেই যদি এমন বেআইনি কাজ করেন, তাহলে তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘
ভারপ্রাপ্ত জেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম বকুলের এমন কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি। অভিযোগের সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার উপপরিচালক শরমিন ফেরদৌস জানান, ‘একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অভিযোগ পেলে তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available