কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকে একক আধিপত্য বিস্তার করেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আওয়ামী লীগ। অনেক নেতাকর্মী সম্পদের পাহাড় গড়েছে। তবে দলকে সুসংঠিত করতে পারেনি।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরপর আত্মগোপনে রয়েছেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯ তম শাহাদত বার্ষিকীতে মাঠে পাওয়া যায়নি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুর রহমান আশা মুঠোফোনে বলেন, ১৫ আগস্ট পালন করার মতো উপযুক্ত পরিবেশ নেই। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরা উচ্ছৃঙ্খল। ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সেজন্য আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি নেই।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের ১৫ আগস্টের কর্মসূচি প্রতিহত করতে মাঠে সবর ছিল বিএনপির নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন ধরে হামলা, মামলায় জর্জরিত ও আত্মগোপনে থেকেও মেটেনি দলীয় কোন্দল। একই ব্যানারে চার ভাগে বিভক্ত কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
সরেজমিন কুমারখালী পৌর শহর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জেলা বিএনপির সদস্য ও কুমারখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিকের নেতৃত্বে হলবাজার থেকে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি বের করা হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি গণমোড়, থানামোড়, স্টেশন বাজার, বাসস্ট্যান্ডের গোলচত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় হলবাজারে এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে এক বক্তব্যে নুরুল ইসলাম আনসার প্রামাণিক বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ফ্যাসিবাদী সরকার ও দোসরদের শাস্তির দাবিতে তিনি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। দলের যেকোনো কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। এদিকে সকাল থেকেই শহরের প্রধান সড়কে অবস্থান নেয় কুমারখালী উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
ছাত্রদলের একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে স্টেশন বাজার চত্বরে সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহানুর রহমান, সদস্য সচিব কাউছার অপু, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইব্রাহিম প্রমুখ।
বিএনপির আরেকটি মিছিল বেলা পৌনে ১টার দিকে রসিদ সুপার মার্কেট এলাকা থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমান। কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় এশিউর গ্রুপের মালিক শেখ সাদির পক্ষ থেকে মিছিলটি বের করা হয় বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
এরপর দুপুর একটার দিকে কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডের কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদি রুমীর পক্ষ থেকে আরো একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। তবে সাবেক এই এমপি মিছিলে ছিলেন না। মিছিলটি স্টেশনবাজার, থানামোড়, গণমোড় হলবাজার প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গোলচত্বর এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে এক বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের ১৫ আগস্ট পালনকে প্রতিহিত করতে মেহেদি রুমীর নেতৃত্বে মাঠে আছি। যতদিন কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকবে, ততদিন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুষ্টিয়া ৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদি রুমী, সাবেক পৌর মেয়র আনসার প্রামাণিক, এশিউর গ্রুপের মালিক শেখ সাদি ও উপজেলা জামাতের আমির আফজাল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
তবে গ্রুপিং ও দলীয় কোন্দলের বিষয়টি অস্বীকার করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন মনোয়ন পাওয়ার জন্য পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তবে দলের প্রয়োজনে সবাই ঐক্যবদ্ধ।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমান বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই থাকতে পারে। তারা পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করতেই পারে। তবে মনোয়ন একজনই পাবেন। যারা প্রকৃত বিএনপি করে, ধানের শিষ করে। তখন সবাই ঐক্যবদ্ধ হবেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available