• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৪:৫৮:১৬ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৪:৫৮:১৬ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

বিনা পারিশ্রমিকে ৫১ বছর ধরে কবর খুঁড়ে দিচ্ছেন মনু মিয়া

৩০ মার্চ ২০২৩ দুপুর ০১:৫৮:৫৪

বিনা পারিশ্রমিকে ৫১ বছর ধরে কবর খুঁড়ে দিচ্ছেন মনু মিয়া

মোজাহিদ সরকার‌‌‌, ইটনা (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: এলাকার কারও মৃত্যুর খবর পেলেই তড়িঘড়ি করে খুন্তি-কোদাল, দা, চাকু, স্কেল আর করাতসহ কবর খোঁড়ার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে ছুটে যান কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের ৭১ বছর বয়সী আলোচিত গোর খোদক মো. মনু মিয়া। দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘোড়ার পিঠে চেপে চলেন। মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে বাঁশ কাটা থেকে শুরু করে কবর খোঁড়া শেষ করে দাফন পর্যন্ত সেখানে থাকেন তিনি। দাফন শেষ হওয়ার পর আবার সব যন্ত্রপাতি ব্যাগে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে উঠে বাড়ির পথে রওনা হন।

কবর খোঁড়ার পর মৃত ব্যক্তির পরিবারের কারও কাছ থেকে নেন না পারিশ্রমিক বা যাতায়াত খরচ। মনু মিয়া কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করছেন ১৯৭২ সাল থেকে।

ডায়েরির তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ২৩ মার্চ পর্যন্ত ২ হাজার ৯২০টি কবর খুঁড়েছেন তিনি। বিনা পারিশ্রমিকে ৫১ বছরের নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় কবর খুঁড়েছেন। নিজে পড়াশোনা না জানলেও কবর খুঁড়ে এসে মানুষকে দিয়ে ডায়েরিতে সুন্দর করে লাশের নাম, ঠিকানা, তারিখ লিখে রাখেন তিনি।

নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলাতেও বহু কবর খনন করেছেন। কবর খোঁড়ার একজন নিখুঁত, সুদক্ষ এবং সুনিপুণ কারিগর হিসেবে নিজের জেলাসহ পাশের জেলা হবিগঞ্জেও সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে মো. মনু মিয়ার।

পাড়া পড়শীরা জানান, মনু মিয়া খুব সহজ সরল একজন ভালো মানুষ, বর্তমান সময়ের স্বার্থ ছাড়া কাউকে কোনো কাজে পাওয়া যায় না কিন্তু সেখানে  মো.মনু মিয়া বিনা পারিশ্রমিকে মানুষের বাড়িতে গিয়ে কবর খুঁড়ে আসেন এটা খুবই বিরল ঘটনা।

চাহিদাবিহীন এই মানুষটার নাই কোনো সন্তান-সন্ততি। নাই অঢেল সম্পদ। তবে তার নীতি-নৈতিকতা মুগ্ধ করে এলাকার সবাইকে। এই বুড়ো বয়সেও কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়া সারাটা দিন উনি যে পরিশ্রম করেন সেটা যেকোনো যুবক করলেও হাঁপিয়ে উঠবে এমন আলোচনা সবার মুখে। স্ত্রী রহিমা আক্তারকে (৫৬) নিয়ে নিজের সৎ উপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ছোট সংসার চলছে এতে খুশি মনু মিয়া।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মনু ভাই খুব ভালো মানুষ। আমরা ছোট সময় থেকেই দেখে আসতেছি তিনি বিনা পারিশ্রমিকে মানুষের কবর খুঁড়েন। উনার মতো এমন ভালো মানুষ আমাদের এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছে এতেই আমরা গর্বিত।

গ্রামের অন্য যারা কবর খুঁড়তেন প্রথম প্রথম তাদের সহযোগিতা করতেন মনু মিয়া। পরে দেখলেন তার নিজের কাজও বেশ সুন্দর হয়। এ ছাড়া অন্যরাও তার কবর খোঁড়ার প্রশংসা করতেন। এরপর থেকে এই কাজে আগ্রহ বাড়তে থাকে মনু মিয়ার।

মনু মিয়া বলেন, একটা মানুষ সবকিছু ফেলে দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর যখন আর কিছুই থাকে না, তখন তার শেষ ঠিকানাটা একটু সুন্দর হোক- এটাই আমি সব সময় চাই। টাকা পয়সার জন্য কবর খুঁড়ি না, মনের শান্তির জন্য এই কাজ করি।

বহু মানুষের কবর খুঁড়েছেন জানিয়ে মনু মিয়া বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, রাষ্ট্রপতির ছোট ভাইসহ বহুজনের কবর খুঁড়েছি। শরীর ভালো থাকলে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত কবর খুঁড়তে চাই। সবচেয়ে খারাপ লাগছিল মায়ের কবর খুঁড়তে গিয়ে। আরেক দুঃখ রয়েছে যে, বাবার কবর খুঁড়তে পারি নাই।
 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ



সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৪:২০:৫২





আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হাওরের চাষিরা
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৩:৩৬:৫৫