কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মসজিদ কমিটির টাকা রাখা নিয়ে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও পূর্বের সাধারণ সম্পাদকের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও উভয়পক্ষের ১০ থেকে ১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
১৭ আগস্ট শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৬ বছর ধরে কসবা জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন ওই এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মসজিদের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসী। সেজন্য প্রায় তিনমাস আগে তাকে বাদ দিয়ে মো. হাবিলকে সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল।
একপর্যায়ে গত ১৬ আগস্ট শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নতুন সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিলকে মারধর করে প্রতিপক্ষের একজন। এরই জেরে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হয়। এ সময় ১০ থেকে ১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে কসবা গ্রামে দেখা যায়, গ্রামের দুই দিকে জড়ো হয়ে আছেন দু’পক্ষের লোকজন। অনেকটা থমথমে পরিবেশ। আতঙ্কিত গ্রামবাসী। বেশকিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে।
কসবা জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিল বলেন, ‘জামাল মসজিদ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করে ব্যবসা করতেন। কোনো হিসাব দিতেন না। সেজন্য গ্রামবাসী তাকে বাদ দিয়ে আমাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছে। শুক্রবার আমার ওপর হামলা করেছে। আবার আজ আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘হাবিল কিছু মাদকাসক্ত লোক নিয়ে এসে আমার সমর্থিত লোকদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। আমার পক্ষের অন্তত ১০-১২ জন আহত হয়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।’
শিলাইদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী হাসান তারেক বিপ্লব জানান, ‘মসজিদের টাকা রাখা নিয়ে দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে বেশকিছু লোক আহত হয়েছেন। ঘরবাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, ‘মসজিদ কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাবিলের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দিয়েছেন। এর আগে পূর্ববর্তী সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিনের পক্ষ থেকে আরও একটি অভিযোগ জমা দিয়েছে। দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available