রাঙামাটি প্রতিনিধি: সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময়ের নামে রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ ঘরনার বুদ্ধিজীবীদের নিয়েই নব নিযুক্ত পার্বত্য উপদেষ্টা চা চক্র করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী বিরোধী শিবিরে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
২৪ আগস্ট শনিবার রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিএনপি, জামায়াত তো বটেই জাতীয় পার্টিরও কোন প্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি। এমনকি ডাকা হয়নি বিগত দিনে আন্দোলনে নেমে মার খেয়ে আহত হওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কাউকে। ছাত্র প্রতিনিধির নাম করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ঘরানার নেতাদেরই সেখানে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বলেন, আমি এই মুরুব্বীদের সাথে পরামর্শ করে গিয়ে সে অনুযায়ী জেলা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করব। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আওয়ামী ঘরনার সুশীলরা কি নিরপেক্ষ জেলা পরিষদ গঠনে গঠনমূলক পরামর্শ প্রদান করতে পারবেন ?
বৈঠকে স্বয়ং আওয়ামী লীগের বিনাভোটে তিনবারে নির্বাচিত প্রতিনিধির নিকটাত্মীয়, স্বজন থেকে শুরু করে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, আওয়ামী লীগের ইলেকশন ম্যানুকুলেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অন্যতম প্রধান দু’জন, আওয়ামী লীগের নিয়োগ দেওয়া বহুল বিতর্কিত অথর্ব মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্য, আওয়ামী ঘরানার পরিষদ মেম্বার, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাঙামাটি সদরে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের বরাদ্দ মেরে খাওয়া প্রতিনিধি, পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের শালা, আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা, জাগো হিন্দু পরিষদের নেতা, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন শিক্ষকসহ বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের ১৫ বছর শাসনকালীন সময়ে বিভিন্নভাবে সুবিধাগ্রহণকারী ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে পার্বত্য উপদেষ্টার বৈঠক রাঙামাটিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, আজকের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তালিকা করা হয়নি; পার্বত্য উপদেষ্টার সহকারী যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেই তালিকা অনুসারেই আমরা সকলকে জানিয়েছি। এখানে জেলা প্রশাসক বা আমাদের কোনো হাত নেই।
এদিকে, রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আজকে রাঙামাটিতে উপদেষ্টা আসবেন এবং ডিসি অফিসে মিটিং করবেন এমন কোনো তথ্য আমাদেরকে জানানোই হয়নি। এমন কার্যক্রমে জেলাজুড়ে মানুষের মনে নানান প্রশ্ন ও দিধা তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সারাদেশে যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আজকের অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হলো এবং সেই আন্দোলনকারীদের সাপোর্টেই সরকারেরই একজন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে রাঙামাটি সফরে এসেছেন। এখানে এসেই স্বৈরাচারীদের নিয়ে রাঙামাটি জেলা পরিষদ পুনঃগঠন নিয়ে মতামত গ্রহণ করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা।
প্রসঙ্গত, বৈঠক শুরুর সময়েই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তারা বের হয়ে যান। এমনটি জানানোর পর থেকেই বৈঠক নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এ বৈঠকে আওয়ামী গড়নার লোকজন ব্যাতীত অন্য সকলকে উদ্দেশ্য করে এরুপ বলা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available